স্মার্টফোনের আলো কী ক্ষতি করে

 

অনলাইন ডেস্ক | ১৬ অক্টোবর ২০১৭।

তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু স্মার্টফোন। গতিময় জীবনে তাল মেলাতে হলে প্রতিমুহূর্তে চোখের সামনে তুলে ধরতে হচ্ছে যন্ত্রটাকে। কিন্তু ঝকঝকে এই ছোট্ট স্ক্রিনই ক্ষতি করছে চোখের। দিন ও রাতের বেলায় চোখধাঁধানো আলোয় বিভ্রান্ত হচ্ছে মস্তিষ্ক। যা শেষ পর্যন্ত শারীরিক সুস্থতার পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মানুষের মস্তিষ্ক অনেকটা ঘড়ির মতো কাজ করে। দিনের বেলায় এটি সবচেয়ে বেশি কাজ করে। রাতে ঘুমের সঙ্গে সংগতি রেখে কাজের গতি কমিয়ে দেয়। এ কারণেই দিনের তুলনায় রাতে অফিসের কাজ করাটা কষ্টকর।

অথচ রাতে ঘুমোনোর আগে আমাদের স্মার্টফোনটা হাতে নিতেই হয়। একটু ফেসবুকিং, হোয়াটস্যাপ বা হালের হুজুগ লুডু স্টার না খেললে অনেকেরই ঘুম হয় না। এই সময়টাতে স্ক্রিনের তীব্র আলোয় মস্তিষ্ক দিন ও রাতের তফাত ধরতে পারে না। মেলাটোনিন নামে একটি হরমোন মস্তিষ্কে ঘুমের সংকেত পৌঁছায়। তীব্র আলোর ফলে এই হরমোনের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনিদ্রা, দৃষ্টিস্বল্পতাসহ স্কিজোফ্রেনিয়ার মতো জটিল মানসিক রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

এটি অনেকটা কৃত্রিম জেট-ল্যাগের মতো। এটি দুর্বলতা, হতাশা, দিনে ঘুমানোর আসক্তি, পড়ার অভ্যাস নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কিছু ভারী অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, যা চোখের জন্য ক্ষতিকর রং ব্যবহার করে। এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য ফ্লাক্স অ্যাপ বা অ্যাপলের নাইট শিফট মোডের মতো কিছু ফিচার এলেও সমস্যার খুব একটা উন্নতি হয়নি। এসব ফিচারে দিনের বিভিন্ন সময়ে আলোর তীব্রতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু স্তিমিত আলো চোখের ক্ষতি কতটা কমাচ্ছে বা আদৌ কমাচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার মতো কোনো গবেষণা হয়নি।

আপাতত এই সমস্যার নিরাময় হতে পারে ঘুমানোর সময় ফোনের ব্যবহার যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করা। বিছানায় থেকে স্মার্টফোনের স্ক্রিনে তাকানো বন্ধ রাখা উচিত। বিছানায় বা পাশের টেবিলে ফোন না রেখে ঘুমানোর আগে স্মার্টফোন বিছানা থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখলে ফল পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ক্লান্ত শরীর স্মার্টফোনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। সূত্র: ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *