বাংলার দর্পন ডটকম :
নিউমার্কেট, রিয়াজুদ্দিন বাজার, স্টেশন রোডসহ আশপাশের হকারদের শৃঙ্খলায় আনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণএলাকাটি হকারদের কারণে ঘিঞ্জি অবস্থায় ছিল। এখন তারা শৃঙ্খলায় এসেছে। এখন দিনের বেলা এই এলাকাটিই শহরের সবচেয়ে সুন্দর এবং জঞ্জালমুক্ত এলাকায় পরিণত হয়েছে। ফুটপাতকেন্দ্রিক ছিনতাই, প্রতারণাসহ যেসব অপরাধ হতো তাও থাকবে না। তবে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা উদ্যোগটি যেন মাঝপথে থেমে না যায়।
রিয়াজুদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ মাহাবুবুল আলম সওদাগর বলেন, সিটি মেয়র যে উদ্যোগ
নিয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কিন্তু আমাদের ভয় অন্য জায়গায়। কেউ কোনো উদ্যোগ নিলে অন্য কেউ তার বিরোধিতা করে।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা হিসেবে এটা আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উচিত মেয়রের এই উদ্যোগকে সহযোগিতা করা।
একইভাবে অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও যদি কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ তাতেও সকলের সহযোগিতা করা উচিত। তবেই উদ্যোগগুলি সাফল্যের দেখা পাবে। কারণ অতীতে দেখা গেছে, অনেক ভাল উদ্যোগ মাঝপথে খেই হারিয়ে
ফেলেছে। সাফল্যের দেখা পায়নি। বিপণী বিতান (নিউমার্কেট) বণিক কল্যাণ
সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানান, আমরা এতদিন তাদের কাছে জিম্মি ছিলাম। এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাবো তা কখনোই চিন্তা করিনি। ব্যবসায়ীদের মুক্তি দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, এতদিন ধরে ঝুপড়ি দোকানের আড়ালে ছিল। ক্রেতারা বড় দোকান ও শো’রুমগুলি দেখতেই পেত না। অথচ তারা বছর বছর ব্যবসায়িক লাইসেন্স নিয়ে, ভ্যাট এবং ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু ঝুপড়ির দোকানদের কাছে তা আড়ালে ছিলেন।
তিনি বলেন, হকারদের তো উচ্ছেদ কিংবা শহর থেকে বিতাড়িত করতে হয়নি। শুধুমাত্র তাদেরকে শৃঙ্খলায় আনা হয়েছে। তাতেই পুরো এলাকার চেহারা পাল্টে গেছে। তামাকুম–ি লেন বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল
হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের এই উদ্যোগের ফলে ফুটপাতকেন্দ্রিক যেসব অপরাধ হতো তা বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে অনেক সাধারণ মানুষে এসে বিপদে পড়তো। মানুষ এটি মুক্ত হয়েছে। সবচেয়ে
বড় কথা হল এখানে যে ফুটপাত আছে মানুষ তা দেখছে এবং হাঁটার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
পথচারীরা হাঁটার সুযোগ পাচ্ছেন। সিটি মেয়রের সদিচ্ছার ফল হিসেবে নিউমার্কেট, রিয়াজুদ্দিন বাজার, স্টেশন রোডসহ আশপাশের এলাকার হকাররা শৃঙ্খলায় এসেছে। তার এই উদ্যোগকে আরো সফল করতে তিনি অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহবান জানান।
গতকাল সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, আমতল থেকে শুরু করে স্টেশন রোড, জিপিওসহ আশপাশের এলাকা হকারমুক্ত ছিল। বিকাল থেকে তারা বসার প্রস্তুতি শুরু করেন।
গতকাল রিয়াজুদ্দিন বাজারের সামনের হকাররা একটু আগেভাগে বসে গেছে। তাদেরকে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ত্রিপল বিছাতে দেখা গেছে।
মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুলের সামনের হকাররা বসেছেন বিকাল ৪টার দিকে পুরোদমে বসে গেছেন। নিউমার্কেটের সামনের হকাররা
বিকাল সাড়ে ৪টার পর বসতে শুরু করেন। নিউমার্কেট থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত সড়কের পাশের হকাররা ৪টা পর্যন্ত বসেনি। জেনারেল পোস্ট অফিসের সামনেও বসেননি। তারা ৫টার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। নিউমার্কেটের বিপরীত পাশে দোস্ত বিল্ডিংয়ের আশপাশে বিকাল ৪টার দিকে হকাররা বসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মোটেল সৈকতের দিকে মোবাইল আর জুতার দোকানগুলি আগেভাগে বসে গেছে। আমতলের দিকেও ফাঁকা ছিল। বিকাল ৪টার পর
তারা বসার প্রস্তুুতি নিচ্ছিলেন। কুসুমকুমারি স্কুলের আশপাশ ফাঁকা ছিল। সেখানে হকারদের বসার তৎপরতা দেখা যায়নি।