ফেনীর নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ঘরে পাঠদান

 

ফেনী প্রতিনিধি :

দরজা-জানালা নেই, বাঁশের বেড়া স্থানে স্থানে ভেঙে পড়েছে। মাথার ওপর একাধিক ছিদ্রযুক্ত টিনের চালা। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ভিজে যায় খাতাপত্র। এমন শ্রেণিকক্ষে চলছে ফেনীর দাগনভূঞার পূর্ব জয় নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় এক দশকের বেশি সময় আগে পরিত্যক্ত জীর্ণ ঘরে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

গত শনিবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পূর্ব জয় নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন বেহাল দশা দেখা গেল। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে দুই পালায় ১৯০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক রয়েছেন। প্রাক্–প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সাতটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি শ্রেণিকক্ষ। বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ঘরে পাঠদান চালাতে হয় শিক্ষকদের।

পূর্ব জয় নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতীয়করণ হওয়া এই বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল একটি টিনের ঘরে। এক যুগের বেশি সময় আগে সেটি পরিত্যক্ত হয়েছে। তিন কক্ষের আরেকটি একতলা পাকা ভবন নির্মিত হয় ১৯৯৫ সালে। তবে সে ভবনটিও জীর্ণ হয়ে পড়েছে।

শিক্ষক দিলরুবা আক্তার বলেন, বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ঘরে ক্লাস নেওয়া হয়। যেদিন বেশি বৃষ্টি হয়, সেদিন শিক্ষকদের অফিসের কক্ষেই শ্রেণির কার্যক্রম চালাতে হয়। এই সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় আগ্রহ কমে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের একটি টিনের ছাউনি দেওয়া ঘর ও একটি পাকা দালান আছে। তবে টিনের ঘরটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত হয়েছে। একতলা পাকা ভবনটিও জীর্ণ হয়ে পড়েছে। সেই ভবনটিরও জানালা ভাঙা। দেয়ালে ফাটল ধরেছে। পিলারের কিছু কিছু অংশ খসে পড়ছে। এখন কার্যত বিদ্যালয়টি শ্রেণিকক্ষ ছাড়াই চলছে।

পূর্ব জয় নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজাদ ভূঞা বলেন, ১৯৬৯ সালে নির্মিত টিনের ঘরে এখনো পাঠদান চলছে। এটি দুঃখজনক। বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ খুবই জরুরি। এ জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

দাগনভূঞা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদ হাজারী বলেন, ওই বিদ্যালয়ের সমস্যা সম্পর্কে তিনি জানেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদেও আলোচনা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবন সমস্যার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *