দেশব্যাপী পরিচিত সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল পর্যটন এলাকা

আবুল কাশেম রুমন,সিলেট:
সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র এলাকা গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর এলাকায় দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট হিসাবে দেশব্যাপী পরিচিত রাতারগুল পর্যটন এলাকা। এখানে বন বিভাগের মালিকানাধীন অন্তত সংরক্ষিত ২ হাজার ৫শ’ একর জায়গা রয়েছে। রাতারগুল পর্যটন এলাকা থেকে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদউদ্দিন আহমদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় চলিত বছরের গত ৪ মাসে বন বিভাগ পর্যটকদের নিকট থেকে প্রবেশ ফি এবং নৌকা ভাড়া থেকে অন্তত ৪০ লক্ষ টাকা সরকারি ভাবে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

রাতারগুলে বন বিভাগের অন্তত ২ হাজার ৫শ’ একর সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে ৫শ’ ৪ একর সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলারবন গঠিত হয়েছে। এখানে অন্তত ২শ’ একর জায়গা বেদখল ছিল। বিভিন্ন সময়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ১শ’ ৮১ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এসব জায়গায় টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল প্রকল্প) নামে ৩ লক্ষ মূর্তার চারা রোপণ করে বাগান সৃজন করা হয়েছে।

উদ্ধারকৃত এসব জায়গায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। সরকারি জায়গা উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয় জনগণের হামলার মুখে পড়তে হয়েছে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: সাদউদ্দিন আহমদসহ ৩জন কর্মকর্তাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা অন্তত ১৫দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সিলেট বনবিভাগ সারী রেঞ্জের আওতাধীন ৬টি বনবিট অফিস রয়েছে। ২০১৭ সালে মো: সাদউদ্দিন আহমদ সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর জাফলং বন বিভাগের মালিকানাধীন বেদখল হয়ে যাওয়া জায়গা উদ্ধার করতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট বনবিটের আওতায় আলীরগাঁও ইউনিয়নের নাইন্দা ও তিতগুলি হাওরে জবর দখলে থাকা ৩৫ হেক্টর জমি উদ্ধার করে সেখানে মূর্তা বাগান সৃজন করা হয়েছে। মূর্তা বাগান বর্তমানে একটি সফল বাগানে পরিণত হয়েছে। লক্ষ্মীনগর বনবিটের অধীনে নিয়াগুল হাওর, পরকুড়ি বিলের পার ও সতির হাওর এলাকা থেকে আরো ১২৫ হেক্টর জায়গা উদ্ধার করা হয়। এখানেও মূর্তা বাগান সৃজন করা হয়েছে।

এছাড়া, বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভাবে চলে আসা ৩৫টি করাতকল উচ্ছেদ করা হয়েছে। সারী বিটের অধীনে জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের বাউরভাগ উত্তর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ৪০ হেক্টর জায়গা জুড়ে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চারিকাটা ইউনিয়নে সংরক্ষিত বনভূমিতে ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯৩ হেক্টর জায়গায় নতুন বাগন সৃজন করা হয়েছে। কানাইঘাট বনবিটের অধীনে দেওয়া টিলা নামক এলাকায় ৩৭ হেক্টর জায়গা উচ্ছেদ করে এখানেও সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *