প্রকাশ্যে যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় নির্যাতন: ফেসবুকে তোলপাড়

 

বাংলার দর্পন  ডেস্ক- বাগেরহাট জেলার শরণখোলায় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে প্রকাশ্যে এক যুবকের গোপনাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁনসহ ৯জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন দৃশ্য ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় ও এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরবর্তীতে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে সোমবার দুপুরে শরণখোলা থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এঘটনায় পুলিশ উপজেলার মধ্য বানিয়াখালী গ্রামের আ. রব হাওলাদের ছেলে রেজাউল করিম (২৫) ও পশ্চিম বানিয়াখালী গ্রামের আবু হানিফ মুন্সীর ছেলে নূর হাসান মুন্সী (২২) নামের দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ফুলহাতা গ্রামের আলাউদ্দিন (৩৫) নামের এক যুবকের সাথে শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য বানিয়াখালী গ্রামের জনৈক ব্যক্তির ১৭ বছরের মেয়ের মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। এর সূত্র ধরে ওই মেয়ের আমন্ত্রণে গত ৯ এপ্রিল আলাউদ্দিন তাদের বাড়িতে আসেন। এলাকায় অপরিচিত হিসেবে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় কতিপয় যুবক তাকে ধরে ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁনকে খবর দেন। তাৎক্ষণিকভাবে ইউপি চেয়ারম্যান ওই এলাকায় গেলে তার কাছে স্থানীয়রা ওই যুবকের বিরুদ্ধে অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগ করে বিচার দাবি করেন।

এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁন ওই এলাকার শহিদের চায়ের দোকানের সামনে প্রকাশ্যে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) ইসমাইল হোসেনকে দিয়ে আলাউদ্দিনের গোপনাঙ্গে ইট বেধে দাঁড় করিয়ে রেখে বর্বর নির্যান চালায়। প্রায় আধাঘন্টা পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মুক্তি মেলে আলাউদ্দিনের। পরে তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনী।

ইউপি চেয়ারম্যানের এমন ন্যাক্কারজনক বিচারের দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে।

শরণখোলা থানার বারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জলিল জানান, বিচারের নামে এমন বর্বরতায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানসহ আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন দু’টি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *