মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি :
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হত্যাকারীর বাড়ি ঘেরাও করেছে ভুক্তভোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনতে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর পুলিশের সাথে উত্তেজিত জনতার সংঘর্ষ ঘটে। সিংগাইর উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামের কোরাইশির ছেলে আলিফ (১৬) পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে রাজু (১৪)-কে হত্যা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলিফ কৌশলে রাজুকে সাইকেলযোগে পার্শবর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের রুপারচর এলাকার কালীগঙ্গা নদীর তীরে কাশবনে নিয়ে যায়। রাজুকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে ফেলে আলিফ চলে যায়।
এদিকে, রাজুর পরিবার রাজুকে খুঁজে না পেয়ে রাতে আলিফের বাড়িতে যায়। আলিফকে সাথে নিয়ে রাজুর পরিবার রাজুকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। রাত ৯ টার দিকে স্থানীয় কাঁচামালের ব্যবসায়ী নুরু মিয়া রুপারচর বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে গুঙ্গানির শব্দ পায়।
সেখানে গিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় রাজুকে উদ্ধার করে সাহরাইল ইব্রাহিম মেমোরিয়াল মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় পরে তাকে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে রাজু মারা যায়।
রাজুর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাজুর স্বজন এবং এলাকাবাসী আজ সকাল ১০ টার দিকে আলিফের বাড়ি ঘেরাও করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ সদস্যরা।
বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে আলিফকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় আলিফসহ তার পরিবারের তিন সদস্যকে উদ্ধার করে সিংগাইর থানায় নেওয়া হয়েছে।
কি কারণে রাজুকে হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চত করে বলতে পারেনি পুলিশ। তবে, পাবজি গেইম খেলাকে কেন্দ্র করে রাজুর সাথে আলিফের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে। হয়তো সেই বিরোধের কারণেই রাজুকে কৌশলে নদীরপাড়ে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, সকালে আলিফের বাড়ি ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে আমাদের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়।
আলিফকে উদ্ধারকালে উত্তেজিত জনতার সাথে আমাদের সদস্যদের সংঘাত বেধে যায়। এতে আমাদের তিনজন সদস্য আহত হয়। দুপুরে আলিফসহ তার পরিবারের তিনজনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।