নদীভাঙন রোধে জিওব্যাগ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

আলফাডাঙ্গা(ফরিদপুর) প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার তিনটি স্থানে মধুমতি নদীর ভাঙন রোধে জিওব্যাগ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে জিওব্যাগে কম বালুভর্তি করে গত এক মাস ধরে চলছে মধুমতির বিধ্বংসী ভাঙন রোধের চেষ্টা।

সরেজমিন দেখা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ও দক্ষিণ চরনারানদিয়া এবং পাচুড়িয়া বাঁশতলা গ্রামের নদীতীরবর্তী স্থানে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় ওই তিনটি ভাঙনকবলিত স্থানে পৃথকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৭ হাজার ৮৯০টি জিওব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেয় সরকার।

নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ৫০ মিটার কাজের জন্য ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দের কথা জানা গেছে। বালুভর্তি প্রতিটি জিওব্যাগের ওজন হতে হবে ১৭৫-১৮০ কেজি। গত ২৭ আগস্ট থেকে ফেলা বালুভর্তি ওই সব জিওব্যাগের ওজন কোনোভাবেই ১৫০ কেজির বেশি হবে না বলে ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা জানান।

বাঁশতলা নদীভাঙন পাড়ের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মো. সিরাজ মজুমদার বলেন, জিওব্যাগে কম বালুভর্তির বিষয়ে শ্রমিকদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম। পরিপূর্ণ বালুভর্তি জিওব্যাগ বেশি ভারী হওয়ায় ভাঙনকবলিত স্থানে ফেলতে তাদের কষ্ট হয়। এ কারণে তারা জিওব্যাগের দুই-তৃতীয়াংশ বালুভর্তি করে নদীতে ফেলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কম বালুভর্তি জিওব্যাগ নদীতে ফেললেও তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড এ ব্যাপারে নির্বিকার। বালুভর্তি জিওব্যাগ ওজন করার জন্য জিওব্যাগ ভরার স্থানে ওয়েট মেশিন থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সরেজমিনে কোনো ওয়েট মেশিন বা পরিমাপক যন্ত্র পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পশ্চিম চরনারানদিয়া গ্রামের নদীভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি কাজ পেয়েছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক তপন মিয়া, দক্ষিণ চরনারানদিয়া গ্রামের নদীভাঙনকবলিত স্থানে জিওব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি কাজ পেয়েছেন সাইফুল ইসলাম এবং পাচুড়িয়া বাঁশতলায় জিওব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি কাজ পেয়েছেন মো. তাজু খান।

নদীভাঙনকবলিত স্থানে জিওব্যাগ ফেলার কাজের তদারকির দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন আহমেদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারী মো. এনায়েত হোসেন।

এ ব্যাপারে পাচুড়িয়া বাঁশতলা স্থানে জিওব্যাগ ফেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার মো. তাজু খানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

কম বালুভর্তির বিষয়ে জানতে চাইলে জিওব্যাগের সেলাইম্যান আবুল কালাম বলেন, হাতের পাঁচটা আঙ্গুল সমান হয় না। কোনো বস্তায় কম আবার কোনো বস্তায় বেশি হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *