কোম্পানীগঞ্জে আ’লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১২

নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আ’লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে রাতের আঁধারে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, গুলি ও ককটেল বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে উপজেলার চরএলাহী বাজার থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে চরএলাহী ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের চরএলাহী গ্রামের ৫-৬ বাড়িতে। এতে ৭জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১২জন আহত হয়েছে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা। আহত ৬জন নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরএলাহী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গণি ও চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থকদের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিবদমান অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোন্দলের জের ধরে এই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আ’লীগ নেতা গণির অনুসারীরা প্রথমে চরএলাহী বাজারে ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চেয়ারম্যান রাজ্জাকের কয়েকজন অনুসারীকে বেধড়ক মারধর করে চরএলাহী বাজারে অবস্থান নিতে চেষ্টা করে। পরে রাজ্জাকের অনুসারীরা সংঘবব্ধ হয়ে গণির অনুসারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া গুলিও ককটেল ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ককটেল ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়।

চরএলাহী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী এবং চরএলাহী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

আ’লীগ নেতা গণি অনুসারী চরএলাহী ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, ইউপি চেয়ারম্যান রাজ্জাক, তার ভাই খোকন, জব্বর ও শাহীন ও কালামের নেতৃত্বে তার বাড়িসহ আরও ৩টি বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় হামলাকারীরা প্রতিপক্ষের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে গুলি চালালে ৭জন গুলিবিদ্ধ হয়। তার ভাষ্যমতে গুলিবিদ্ধরা হলো, চরএলাহী ৪নম্বর ওয়ার্ডের হেলাল মেম্বারের ছেলে মো.রুবেল (২৫),মৃত আব্দুল খালেক মেম্বারের ছেলে বাহার উদ্দিন (৩৬), সিরাজ আলমের ছেলে সবুজ (৩৮), জইধর মিয়ার ছেলে ইউসুফ (৩৩), মো. বেলালের ছেলে ফিরোজ (২৪), জামাল উদ্দিনের ছেলে ইলিয়াছ (২২)। এরা সবাই চরএলাহী ৪নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ভাই আবদুল আজিজ খোকন দাবি করেন, তার ভাই রাজ্জাক চেয়ারম্যান এলাকায় নেই। এই হামলার সাথে তিনি তার ভাই এবং তাদের কোন অনুসারী জড়িত নয়। আ’লীগ নেতা আব্দুল গণির নির্দেশে তার ভাই কামাল, বেলাল,নবী ও হেলাল মেম্বার প্রথমে চরএলাহী বাজারে ককটেল হামলা চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এক পর্যায়ে আমাদের কয়েকজন অনুসারীকে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের অনুসারী ধনু নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় এবং আরও কয়েকটা বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। আমাদের তিনজন অনুসারী আহত হয়। আহতরা হলো,মহরম আলী চেয়াম্যানের ছেলে রিয়াদুল ইসলাম রাজু (২৮), মো.সামছুল হকের ছেলে আবদুর রহিম (২০), গোলাপ মাওলার ছেলে মো.রানা (২০)।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় ৬জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের মাথা ফাটা, ২-১ জনের শরীরে স্প্রিন্টারের আঘাতের মত লাগছে। এটি ককটেলের আঘাত হতে পারে, বিষয়টি পুরোপুরি ডাক্তার বলতে পারবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে তিনি মন্তব্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *