কোম্পানীগঞ্জে বাদল অনুসারী ৪ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ, চার পুলিশ আহত

নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের ৪অনুসারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছে তার অনুসারীরা।

শনিবার (১২ জুন) দুপর পৌনে ১টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে বাদলের এই ৪ অনুসারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার এই ঘটনা ঘটে।

বাদল অনুসারী চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন ভাষ্যমতে গুলিবিদ্ধরা হলো, চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের হিয়াল্লাগো বাড়ির বাসিন্দা আ’লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৫), তার ছেলে চয়ন (২০), ও তার ভাগিনা আরিয়ান (২৩), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের রুপনগর গ্রামের বাসিন্দা হৃদয় (২৮) ।

এর আগে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বসুরহাট বাজারের বসুরহাট টু দাগনভূঞা সড়কের কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলও তার অনুসারী উপজেলা আ’লীগ হাসিবুল হোসেন আলালের ওপর কাদের মির্জার নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলার পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠে।

স্থানীয়রা জানায়, বাদলের ওপর মির্জার নেতৃত্বে হামলার খবরে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে অবস্থান নিয়ে বসুরহাট টু পেশকারহাট রাস্তার মাথার প্রধান সড়ক অবরোধ করে বাদলের অনুসারীরা।

এ সময় পুলিশ এসে তাদেরকে বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ওপর। তারপর পুলিশ আ’লীগ নেতা সবুজকে বেধড়ক মারধর করলে তার অনুসারীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এতে আ’লীগ নেতা সবুজ, তার ছেলে ও এক ভাগিনসহ সহ চার জন গুলিবিদ্ধ হয়। বাদলের ওপর হামলার ঘটনার পর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ ঘটনায় কাদের মির্জার সম্পৃক্ততার অভিযোগে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ও বসুরহাট পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় কাদের মির্জার বিচার দাবি করে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাদলের অনুসারীরা। সমাবেশ থেকে বক্তারা কাদের মির্জার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, রাস্তায় পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। তবে এ ঘটনায় কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি জানান, তিনি গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনেছেন। তবে কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে এ বিষয়ে তিনি এখনো সু-নির্দিষ্ট ভাবে জানেনা। ওসি সাইফুদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে তিনি হাসপাতালে খোঁজ খবর নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাবেন।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো.আলমগীর হোসেন বলেন, কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে তা স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে তারা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছিল। পুলিশ সরাতে গেলে তারা পুলিশের গাড়ি ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদেরকে শর্ট গানের ২০-২২ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

উল্লেখ্য, শনিবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে আ’লীগ নেতা আলালসহ ঢাকার উদ্দেশ্যে বসুরহাট হয়ে রহনা করে। যাত্রা পথে বসুরহাট বাজারের প্রেসক্লাব কোম্পানীগঞ্জের একটু সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে কাদের মির্জা তার ৪০-৫০জন অনুসারী নিয়ে বাজার পরিদর্শন করে আসার পথে বাদলের গাড়ির মুখোমুখি হয়।

এ সময় কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারী কেচ্ছা রাসেল,ডাকাত মাসুদ, খান,শিহাব, সজল, আরিফ, ওয়াসিমসহ ৪০-৫০জন অনুসারী মিজানুর রহমান বাদলের গাড়ির গতি রোধ করে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

উপজেলা আ’লীগের মুখপাত্র মঞ্জু অভিযোগ করেন,হামলাকারীরা প্রথমে তার গাড়ির পিছনে গুলি করে। এক পর্যায়ে গাড়ির গতি রোধ করে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তার হাত-মাথা পাটিয়ে দেয়,পা ও বুকের হাড় ভেঙ্গে দেয় এবং কানে গুরুত্বর জখম করে। এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *