ফেনী’ প্রতিনিধি :
প্রতিবছর বর্ষার শুরুতেই দু-একদিনের বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের পানিতে টইটুম্বুর হয় মুহুরী নদী। সামান্য বৃষ্টির পানিতে নদীর তার ভারসাম্য হারিয়ে ভেঙ্গে যায় বেরিবাঁধ। বছরের-পর-বছর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এই জনপদের সাধারণ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বসতবাড়ি ফসলি জমি ও মাছের ঘের।
তবে প্রতিবছর বন্যায় বেরিবাঁধ ভাঙলেই মেরামত ও স্থায়ী বাঁধের মিথ্যে আশ্বাস দেন জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত বছরের মে থেকে জুনে একাধিকবার ফুলগাজী সদরের দৌলতপুর, বরইয়া, ঘনিয়ামোড়া, দেড়পাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বেরি বাঁধে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।
প্রতিবছরই উপজেলা ও জেলা প্রশাসন থেকে সামান্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে থাকেন তবে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়না। এ বছরও বর্ষা শুরু হতেই দুদিনের বৃষ্টিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয় মুহুরী নদী।
৬ জুন (রবিবার) ফুলগাজী সদরের উত্তর শ্রীপুর গ্রামের নাপিত কোনা অংশে আবারও মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় লোকালয়। পানির তীব্র স্রোতে গাছপালাসহ ভিটেবাড়ি হারায় পরিবার।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের হানিফ জানান, গত রাত ১১ টার দিকে সরকারি সেচ প্রকল্পের জন্য বসানো পাইপের পাশ থেকে পানি চুকিয়ে পরে পাশে বালু সরে গিয়ে এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেও কোন ভাবে রক্ষা করতে পারিনি। তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কে ফোন করা হলেও তারা কোনো রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। রাতের অন্ধকারে গাছপালাসহ বাড়ির একাংশ পানি স্রোতে ভেসে গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাত থেকে এখন পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের কেউই আমাদের এখানে পরিদর্শন করতে আসেনি এবং আমাদেরকে কোন সহযোগিতা করেনি।
তবে ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুজ্জামান, ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভাঙ্গনস্থান পরিদর্শন করেছেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়াও ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শনে যান ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোজাম্মেল হক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ জানান, গতকাল মুহুরী নদীতে বিপদসীমার প্রায় ৪৬ সেন্টিমিটার উপরে পানি প্রবাহিত হয়েছে। পানির অতিরিক্ত প্রেসারে বেরিবাদের অংশের ছোট ছোট ছিদ্র হয়ে পরবর্তীতে বড় আকার ধারণ করে এই ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে।
রাতে আমরা এখানে ভাঙ্গনের তথ্য জেনেছি সকালে ভাঙ্গন মেরামতে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আগামী দুই দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ মেরামত করা হবে।