কোম্পানীগঞ্জে রাক্ষুসে বামনী গিলে খাচ্ছে মানুষের বসতভিটা ও ফসলী জমি

নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নে অব্যাহত রয়েছে বামনীয়া নদীর ভাঙন। রাক্ষুসে বামনী গিলে খাচ্ছে মানুষের বসতভিটা ফসলী জমি, স্কুল ও মসজিদ। রাক্ষুসে বামনীর অব্যাহত তান্ডবে মানুষের বাড়িঘর ভেঙ্গে নেয়ার সাথে নিয়ে যাচ্ছে তাদের ভবিষ্যত স্বপ্ন। সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়ছে নদী তীরবর্তী বসবাসরত সাধারণ মানুষ।

নদীর এ ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ভাঙনের শিকার স্থানীয় অধিবাসীরা।

সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়নের ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বামনীয়া নদীর তীব্র স্রোত ও নদীর ঢেউয়ে ভাঙছে নদীর পাড়। ইতিমধ্যে শতশত একর ফসলী জমি ও শতশত পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

চরএলাহী-চরলেংটা ঘাট পাকা সড়কটির প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ চলে গেছে নদীগর্ভে। এ দুটি এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি নতুন করে ভাঙতে শুরু করেছে এ ইউনিয়নের আরো দুটি ওয়ার্ড। রাক্ষুসে বামনীর ভাঙনের তীব্রতা এতই প্রকট যে, মনে হচ্ছে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙনের প্রতিযোগীতায় নেমেছে নদীটি।

ঐ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙনের ঝু্ঁকিতে থাকা চরলেংটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ও তদারকিতে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের নিজ উদ্যোগে জামে মসজিদসহ অনেক পরিবার তাদের একমাত্র বসতঘর সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের মতে, নদী ভাঙন রোধে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। যেটি উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের স্লুইস গেইট এলাকা থেকে শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায়, বেড়ীবাঁধ নির্মানের পাশাপাশি নদীতে ব্লক ডাম্পিং করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে এগোনোর কারনে তা সবেমাত্র মুছাপুর হয়ে চরফকিরার একাংশ পর্যন্ত এসেছে। যে কারনে ওই দুটি ইউনিয়ন ভাঙন থেকে রক্ষা পেলেও চরএলাহী ইউনিয়ন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

চরলেংটা ঘাটে ভাঙনের শিকার ব্যবসায়ী মোঃ শাহজাহান ও অজি উল্যাহ বলেন, এ এলাকার অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমরাও নিঃস্ব হওয়ার পথে। তাদের দাবী দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীকে রক্ষা করা হোক।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব আন্তরিকতার সহিত এই এলাকাবাসীকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করে বলেন, যে প্রকল্পটি চলমান রয়েছে তা দ্রুত কাজ করে শেষ করা হোক। তাহলে আমরা ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাব।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেন, বামনীয়া নদীর ভাঙন থেকে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে রক্ষা করতে মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এজন্য তিনি শতশত কোটি টাকা খরচ করে নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প বরাদ্ধ করেছেন। যে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ উপজেলায় আর ভাঙন থাকবেনা।
বাংলারদর্পন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *