ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রধান ডাকঘর এখন ঘুষের রাজ্য – বাংলারদর্পণ

মোঃ মিরাজ উদ্দিন, ছাগলনাইয়া (ফেনী) :
 অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে ছাগলনাইয়া পোস্ট অফিসে। টাকা ছাড়া কোনো প্রকার সেবা মেলে না সেখানে। প্রতিদিনই হয়রানির শিকার হচ্ছে সেবা নিতে আসা গ্রাহকরা। ছাগলনাইয়া পৌর শহরের পশ্চিম ছাগলনাইয়া থানাপাড়া সংলগ্ন পোস্ট অফিস অবস্থিত।
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পোস্ট অফিসে চিঠি আদান-প্রদান এখন আর আগের মতো নেই বললেই চলে। শুুধমাত্র সরকারি ডাক আদান-প্রদান করে পোস্ট অফিসের কর্মচারীরা। সাধারণ জনগন এখন বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে পোস্ট অফিসে কর্মযজ্ঞ আগের মতো নেই বললেই চলে।
সরকারি বেসরকারি ব্যাংকগুলো আমানতের ওপর লভ্যাংশ কমিয়ে দেয়ায় সাধারণ আমানতকারীরা এখন পোস্ট অফিসের সঞ্চয়পত্রের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। কিন্তু এ পোস্ট অফিসে গ্রাহকেরা সঞ্চয় পত্র জমা কিংবা সঞ্চয়পত্রের মুনাফা টাকা উত্তোলন করতে গেলে গ্রাহকদের প্রতিটি টেবিলে দিতে হয় ঘুষ।
এ জন্য তাদেরকে খুশি করতে গ্রাহকরা শত টাকার নোট নিয়ে পোস্ট অফিসে প্রবেশ করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নারী-পুরুষ গ্রাহক অভিযোগ করে জানান, প্রত্যেক টেবিলেই ঘুষ দিতে হয় না হলে তারা সেবা দিতে অপারগতা জানায়, তাই বাধ্য হয়ে ঘুষের টাকা দিতে হয়। গ্রাহকের লাভের টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হন প্রায় প্রতিটি গ্রাহক।
উপজেলার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয়পত্র জমা দিতে গিয়ে তারা ৫০০ টাকা ঘুষ দাবি করে, পরে ২০০ টাকা দেওয়ার পরও ১ ঘন্টা বসিয়ে রাখে আমায়!! ভুক্তভোগি খালেদা আক্তার ও রাশেদা আক্তার রুমা নামে গ্রাহক একই অভিযোগ করে। সুদের টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে এমনি হয়রানির শিকার হওয়ার কথা জানান অনেকেই। গ্রাহকরা আরো জানান পোষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের টাকা না দেয়ায় সুদের টাকা উত্তোলন করতে পারেননি সময়মত।
গ্রাহকেরা আরো অভিযোগ করেন, সঞ্চয়পত্র টাকার ওপর লাভের অংশ উত্তোলন করতে গিয়ে পোস্টমাস্টার সকলের হাতেই প্রথমে ঘুষের টাকা বুঝিয়ে দিয়ে টাকা হিসাব নিতে হয়। কর্মরত অপারেটর মোঃ শহীদ উল্যাহ্কে টাকা না দিলে সঞ্চয়পত্রের সুদের টাকার হিসাব মেলে না। হিসাব না পেলে টাকা উত্তোলন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে বলে জানায় ভুক্তোভোগীরা। এবিষয়ে কর্মরত অপারেটর মোঃ শহীদ উল্যাহ্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, গ্রাহকের অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট দাবি করেন এবং নিজেকে সাংবাদিক বলেও তীর্যক ভাষায় পরিচয় দেন।
পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মোঃ দাউদ মিয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে কিছুই জানিনা, আমার অধীনে কর্মরত কর্মচারিরা কাগজ পত্রাদি নিয়ে আসলে শুধু সাক্ষর দিয়ে থাকি!!! তিনি আরো জানান, আমি ছাড়া হয়তো অন্যন্য কর্মরত কর্মচারিরা ঘুষ নিতে পারে বলেও মতপ্রকাশ করেন। উপজেলার এই পোস্ট অফিসে নারী সঞ্চয়কারী সংখ্যা অনেক বেশি হওয়াতে অনেক অনিয়ম, ঘুষ হচ্ছে বলে গ্রাহকেরা মনে করেন।
বাংলারদর্পণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *