উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি (ভিডিওসহ) – বাংলারদর্পণ

প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ৩১ সে.মি.উপরে বইছে। ফলে পৌর শহরের আবাসিক এলাকাগুলো নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। গতরাত বৃষ্টিাপত না হলেও থেকে পৌর এলাকার লিপুর, পশ্চিমহাজিপাড়া, নতুন পাড়া, মল্লিকপুর আবাসিক এলকার সব বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে জেলার ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

ইতিমধ্যেই বহু মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। কয়েক লক্ষ পানিবন্দি মানুষ দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চললেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।

শহরের প্রধান সড়কসহ অলি-গলিতে বানের পানি প্রবেশ করায় শহরের অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শহরের উপর দিয়ে চলাচল করছে ছোট-ছোট নৌকা। সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ছাতক-গোন্দিগঞ্জ-সিলেট, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক-জাউয়া, ছাতক-দোয়ারা সড়কের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে জেলা সদরসহ দেশের সকল অঞ্চলের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ গোলাম কবির জানান, বন্যার্তদের সহায়তা প্রদানে মেডিকেল টিমসহ সাধ্যমত সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

আরো দেখুন >>>

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে পানি। দ্বিতীয় দফা বন্যায় কষ্টের শেষ নেই মানুষের। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা । হু হু করে পানি বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বন্যার আরও বিস্তার হওয়ায় পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। রবিবার দুপুরের মধ্যেই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিভিন্ন পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। ধান, গবাদী পশু, আসবাবপত্র যেন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হাওর বেষ্টিত শাল্লা উপজেলায় দশদিনের মাথায় ফের বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ। বসত বাড়িতে পানি ওঠার কারণে শনিবার সকাল থেকেই তাদের ঘরের রান্নাবান্নার কাজ করতে বিরম্ভনায় পড়তে হয়েছে।

শুকনো খাবার সংগ্রহ করে তারা খাদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পানি বিপদসীমায় প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট ছোট গাছের চারা, সবজী বাগান মৎস্য খামার পানির নীচে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

গত বন্যার তুলনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অসমাপ্ত দিরাই শাল্লা সড়ক, ভাটী বাংলা কলেজ, সুখলাইন কমিউনিটি ক্লিনিক, সাতপাড়া বাজার, মনুয়া বাজার, নিজগাঁও বাজার, বিভিন্ন পাড়ার সংযোগ রাস্তা, গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের নতুন পাড়াগুলো।

এছাড়াও নদীর তীরবর্তী নতুন গ্রামগুলোর বসতবাড়িগুলো ২ থেকে ৩ ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। অপরদিকে দিরাই শাল্লার সড়কের যেটুকু কাজ হয়েছিল সেটি ও বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে পানির তোড়ে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন,গত বন্যায় কাচা ঘরবাড়ির ক্ষতি হওয়ায় আমরা ঢেউটিন বিতরন করেছি। এবারো পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলারদর্পণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *