করোনায় সংকটে কর্মহীনরা : প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারে স্বস্তি

প্রতিবেদক :

করোনায় সংকটে পড়া কর্মহীন ও দুস্থদের হাতে পৌঁছতে শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার। পরিবারপ্রতি আড়াই হাজার টাকা পেয়ে কেউ ছেলেমেয়ের জন্য ঈদের জামা কিনছেন। কেউ করছেন ঈদের বাজার-সদাই। আবার কেউ কেউ এ টাকায় সন্তানদের খাতা-কলম বা দুধ কিনতে পেরে খুশি। একে দুঃসময়ের অবলম্বন হিসেবেই দেখছেন উপহারপ্রাপ্তরা।

সাভারের পরিবহন শ্রমিক কামাল হোসেনের আয় বেশ কিছু দিন ধরে বন্ধ। কিন্তু ঈদে আর কিছু না হোক দুই সন্তানের জন্য নতুন জামা কিনতে হবে। একটু ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করা দরকার। মোবাইল ফোনে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার আড়াই হাজার টাকা পৌঁছে গেছে তার অ্যাকাউন্টে। এতে কমেছে দুশ্চিন্তা। তিনি বলেন, আমাদের মতো যারা দরিদ্র, এ মুহূর্তে এই টাকা তাদের কাছে অনেক কিছু।

নওগাঁর রানী আক্তারও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার। রিকশাচালক স্বামীর কাজ বন্ধ তাই ঈদ তো পরের কথা সংসারের প্রতিদিনের খরচ চালানেই যখন কঠিন হয়ে পড়েছিল, তখন এ টাকাই তাদের স্বস্তির কারণ।

তিনি বলেন, করোনা আসার পর থেকে আমাদের কোনো কাজ-কর্ম নেই। এ টাকা দিয়েই আমাদের বাচ্চাদের দুধ কিনছি, চাল-ডাল কিনছি; বাচ্চাদের খাতা-কলম কিনছি।

একই ধরনের কথা বলেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার এক উপকারভোগীও। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে সহযোগিতা করেছেন তার জন্য উনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

নীলফামারীর বাবুপাড়ার উপকারভোগী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর টাকা পাওয়ার পরই মনের মধ্যে এক অন্য ধরনের খুশি জাগল। টাকা পাওয়ার পরই তা দিয়ে আমি বাজার করেছি।

বরিশালের বাকেরগঞ্জের এক নারী বলেন, শেখ হাসিনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ঈদের আগে তিনি আমাদের টাকা দিয়েছেন। আমরা এতে অনেক উপকৃত হয়েছি।

রাজধানীর পাংশার এক ব্যক্তি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। সেই টাকা দিয়ে আজ (শনিবার) বাজার করেছি। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি যেন সারা জীবন দেশের খেদমত করার সুযোগ পান।

বগুড়ার এক উপকারভোগী বলেন, আমরা কোনো দল করি না। এ করোনা সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী যে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাতে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যে টাকাগুলো পেয়েছি তাতে আমাদের খুবই উপকার হয়েছে।

বরগুনার পাথরঘাটার এক ইমাম বলেন, এ টাকাটা পাওয়াতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। অতীতে কোনো সরকার এভাবে সহযোগিতা করেনি।

মানিকগঞ্জের এক বস্তিতে বসবাসকারী নারী উপকারভোগী বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমরা বস্তিতে বাস করি। আমাদের খাওয়া দাওয়ায় খুব কষ্ট। যে টাকাটা আমাদের দেয়া হয়েছে, এতে খুব উপকার হয়েছে। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আল্লাহ ভালো রাখুন।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা চষ্টো করেছি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যারা পাওয়ার তারা যেন প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের এ আড়াই হাজার টাকা পান। ৫০ লাখ মানুষের কাছে হাতে হাতে টাকা পোঁছে দেয়া একটা বড় কর্মযজ্ঞ।

এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপকভাবে সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়। এর একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী উপলব্ধি করেন কিছু শ্রেণি-পেশার মানুষ আছে, যারা ত্রাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় কিন্তু তাদের কিছু সহযোগিতা দরকার। পেশাগত কাজ বন্ধ থাকার কারণে তারা আর্থিক অনটনের মধ্যে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী একটি তালিকা করে তাদের অ্যাকাউন্টে একটি নির্দষ্টি পরিমাণ টাকা প্রদান করবেন।

তিনি বলেন, ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও আইসিটি ডিভিশনের এক যৌথসভায় সিদ্ধান্ত হয়, একটা সফটওয়্যার তৈরি করা হবে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে আইসিটি ডিভিশনের কিছু প্রোগ্রামার এটা তৈরি করেন। এ সফটওয়্যারে আমাদের ডাটাগুলো আপলোট করা শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তারা ডাটাগুলোকে ভেলিডেট করে শুদ্ধ ডাটাকে ফিন্যান্স ডিভিশনে পাঠায়। তারা এ ডাটাগুলো পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইএফপির মাধ্যমে প্রত্যেকটা মানুষের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকাটা পাঠায়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সময়। যেকোনোভাবে ঈদের আগেই মানুষের হাতে পৌঁছাতে হবে। সময় আছে কম, কাজ অনেক বেশি। কিন্তু সবাই নিবিড় ও নিবেদিতভাবে কাজটা করছেন। ফলে আমরা আশাবাদী ঈদের আগেই প্রতিটি পরিবারকে এ টাকাটা পৌঁছে দিতে পারব। বাংলারদর্পন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *