আক্রান্ত ২সন্তানসহ করোনায় মৃত স্বামীর লাশ নিয়ে অপেক্ষায় সুজাতা চৌধুরী | বাংলারদর্পন

প্রতিবেদকঃ
স্বপ্নের দেশে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে স্বামী রতন চৌধুরী ও স্ত্রী’ সুজাতা চৌধুরী সন্তানসহ এসেছিলেন এই স্বপ্নের দেশ আমেরিকায়। ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার। নিজে কাজ করেন, স্বামী কাজ করেন, দুই সন্তান স্কুলে যায়। করোনার বিপদ সংকেত পাবার সাথসাথেই স্বামী ছুটি নিয়ে বাড়ি ঢুকলেন, সন্তানরাও বাড়িতে।

সুজাতা চৌধুরী নিজের অজান্তেই ভাইরাস বাড়ি নিয়ে আসলেন কাজের জায়গা থেকে। নিজে মারাত্মক অসুস্থ হবার আগেই স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লেন। দুই সন্তানও আক্রান্ত হলো ভাইরাসে। হাসপাতালে জায়গা না পাওয়ায় বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। ডাক্তারের নির্দেশনায় তিন বেডরুমের বাড়িতে স্বামী সন্তানদের আলাদাভাবে রুমগুলো ছেড়ে দিয়ে সুজাতা নিজে জায়গা করে নিলেন ড্রইং রুমে। মধ্যরাতেও রুমে রুমে গিয়ে চেক করেন, কে কেমন আছে।

১১ এপ্রিল শনিবার ভোরে স্বামীর রুমে ওষুধ দেবার জন্য ঢুকে কোন সাড়া পেলেন না স্ত্রী’। যা বুঝবার অল্পতেই বুঝে নিলেন তিনি। বাইরে থেকে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে সন্তানদের ডেকে উঠালেন। শান্ত স্থিরভাবে বললেন ওদের সবকিছু।সন্তানরাও ততক্ষণে বুঝে গেল করোনা কেড়ে নিয়েছে তাদের বাবাকে।

সুজাতা চৌধুরী নিজেই ৯১১ নাম্বারে কল করলেন। উত্তর পেলেন তাদের আসতে দেরি হবে। সারাদিন তিনটি অ’সুস্থ মানুষ বসে রইলেন তাদের অ’তি প্রিয়জনের মৃ’তদেহ নিয়ে। বিকেল চারটায় তিনজন স্যোসাল ওয়ার্কার আসলো। সাথে আসলো না ম’র্গের গাড়ি কিংবা কোন সরঞ্জাম। তারা জানালেন তাদের অসহায়ত্বের কথা। সরঞ্জাম সর্টেজ ও মর্গ বা অস্থায়ী ট্রেলারের মর্গে জায়গার অভাবের কথা।

কিছু মৃতদেহ মাটিচাপার পর মর্গ কিছুটা খালি হলে তারা নিয়ে যাবে মৃতদেহ। প্লাস্টিকের ডাবল বডি ব্যাগে স্বামীর দেহ ভরে স্ট্রেচারে বেধে স্প্রে করে রুমেই রেখে বন্ধ দরজায় ‘নো এনট্রি’ হলুদ সাইন ঝুলিয়ে চলে গেলেন তারা। এক রুমে প্রিয় স্বামীর মৃতদেহ আর অন্য রুমে একই রোগের তিনটি মানুষ নিঃশব্দ অপেক্ষা ! কবে কখন কিভাবে কার ডাক আসবে পরপারের। আওয়ামীলীগ নেতা ওমর ফারুক এর আইডি থেকে নেয়া। বাংলারদর্পন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *