নিউজ ডেস্কঃ
আজ থেকে দীর্ঘ ৪৮ বছর আগে এ বাংলার মানুষ শুধু একটি মাত্র স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধে করে বাংলার ৩০ লক্ষ্যে শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছিল লাল সবুজ বিজয়ের পতাকা। আর এই স্বপ্ন ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা। এটা এমন একটি দেশ যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্য সেখানে থাকবে সব মানুষের সমান অধিকার- গরিব/ ধনী, মুসলিম, হিন্দু, নারী/পুরুষ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একই সাথে বসবাস করবে।
সেই স্বপ্নের দেশে থাকবে ন্যায় বিচার ও এমন সমাজ ব্যবস্থা যেখানে সকল নাগরিক সমান সুযোগ পাবে তার যোগ্যতা অনুযায়ী। এমন একটি সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ যেখানে সবার জন্য থাকবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, বাসস্থানের ব্যবস্থা, শিক্ষার ব্যবস্থা, এমন একটি সোনার দেশ যেখানে চিকিৎসার অভাবে কেউ মারা যাবে না। কত সুন্দর এই সোনার বাংলার স্বপ্ন, তাই না?আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে, এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন একটি সম্মৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে। এই অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে ও আরো গতিশীল করতে আমাদের সকলের কিছু না কিছু করণীয় আছে।
একটি সুস্থ সবল মানুষের জীবন ও স্বপ্ন যেমন কেড়ে নিতে পারে ক্যান্সারের মতো একটি ব্যাধি, ঠিক তেমনি একটি জাতির প্রাণ ও স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করতে পারে আরেক ধরেনের ক্যান্সার যার অপর নাম দুর্নীতি। আজ আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেই সোনার বাংলা বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা এই দুর্নীতি নামক ক্যান্সার।আমরা জানি বর্তমান সরকার দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে। এবং এর নমুনা আমরা দেখেছি কিছু হাই প্রোফাইল ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তদন্ত প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে যা সকল সংবাদ মাধ্যমে নিয়মিত প্রচারিত হচ্ছে।
তাই আজকে আমাদের সকলের দায়িত্ব সরকারকে এই উদ্যোগে সহায়তা করা, কেন না আমরা সবাই কিন্তু কোন না কোনভাবে এর জন্য দায়ী। আমি আপনি সবাই এর সাথে জড়িত কারণ আমরা নিজেরা সরাসরি না করলেও আমরা এর স্বাক্ষী। বললে ভুল হবে না যে আমরা কাউকে না কাউকে চিনি যে চোখের সামনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা শুধু চুপে চুপে আলাপ সমালোচনা করছি, কোন ব্যবস্থা নেইন। এখন হয়তো প্রশ্ন করবেন, কি আর ব্যবস্থা নিবো, আমাদের কথা কেউ কি শুনবে? হ্যা, শুনবে আমরা যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় সহায়তার হাত বাড়াই।
সর্বোপ্রথম আমাদের বুঝতে হবে দুর্নীতি কি, এর সংজ্ঞা জানতে হবে:দুর্নীতি (ইংরেজি: Corruption) দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন আদর্শের নৈতিক বা আধ্যাত্মিক অসাধুতা বা বিচ্যুতিকে নির্দেশ করে। বৃহৎ পরিসরে ঘুষ প্রদান, সম্পত্তির আত্মসাৎ এবং সরকারি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করাও দুর্নীতির অন্তর্ভুক্ত।দুর্নীতির সংজ্ঞা আমরা বুঝলাম এখন এর আলামত কিভাবে চিহ্নিত করতে হয় সেই দিকে দৃষ্টি দেই। ধরেন কোন এক গ্রামের ছেলে যার বাবা হয়তো ১০ বছর আগে একটা ছোট্ট কাঠের স-মিল চালিয়ে কোন মতে পরিবার চালাতো।
আর আজ,দুর্নীতিবাজ চিহ্নিত করার তালিকা:
1. হটাৎ তাদের ৩-৪ কোটি টাকার ৩ তালা পাকা বাড়ি
2. বড়ো ভাই কোন ৫-৬ কোটি টাকার ইট খোলার মালিক
3. পেট্রল/সি ন জি ফিলিং স্টেশন প্রক্রিয়াধীন
4. গ্রামের স্কুলে শত বার্ষিকী অনুষ্ঠানে ৩-৪ কোটি টাকা ব্যয় করে অনুষ্ঠান
5. টিভি চ্যানেলের মালিক/অংশীদার
6. ঢাকা শহরে নামে বেনামে একাধিক রেস্তরাঁ
7. নামে বেনামে একাধিক ফ্লাট/এপার্টমেন্ট
8. আমেরিকা বা ইউরোপে মিলিয়ন ডলার বাড়ি
9. ২-৩ গাড়ি একত্রে যার মূল্য ৩ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে
এখন এইসব দেখে আপনি বলছেন, আরে এইটা তো আমাদের গ্রামের রোকনের কাহিনী এবং ওকে নিয়ে অনেক আলাপ আলোচনাও করেছেন বন্ধু বান্ধব আর পরিবারের সাথে কিন্তু এ নিয়ে আর কিছু করেন নাই। কারণ কিছু যে করার আছে সেটা হয়ত আপনি জানেনও না। এই ধরণের দুর্নীতিবাজরাই সমাজের রন্ধে রন্ধে ঢুকে সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে- নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত আর মিস গাইড করছে।
এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। সাধারণত এদের আয় (ইনকাম) এর সাথে ব্যয় আর সম্পত্তির মিল থাকে না। আর এসব দুর্নীতিবাজ চিহ্নিত করার দায়িত্ব হচ্ছে NBR (ন্যাশনাল রেভিনিউ বোর্ড) এর এবং তার পর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার দায়িত্ব থাকবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপর ।এসময়ে তিনি আরও লিখে জানান, তাহলে আমি আগামিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও NBR ন্যাশনাল রেভিনিউ বোর্ডদের কর্মকর্তাদের কাছ জানতে চাইবো যে, বাংলাদেশের নাগরিক কী তাহলে প্রক্রিয়াতে কোন সম্ভাব্য দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবে?