প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সফলতায় জঙ্গীমুক্ত বাংলাদেশ | বাংলারদর্পন

নিউজ ডেস্কঃ

হলি আর্টিজনের ঘটনার পর অনেকেই আশংকা করেছিল বাংলাদেশ বোধহয় একটি জঙ্গিরাষ্ট্র হিসেবে আবার আবির্ভূত হবে। বিদেশিদের কাছে একটি আতংকের নাম হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে নিরাপদ মনে করবে না বিদেশি রাষ্ট্রগুলো। উন্নত বিশ্ব বাংলাদেশকে নিয়ে নানা গবেষণা করবে। বলার চেষ্টা করেবে বাংলাদেশ জঙ্গিদের অভয়ারন্য। বাংলাদেশকে আরেকটি পাকিস্তান বা আফিগানিস্তান বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু হলি আর্টিজন ঘটনার পর দেখা গেল বাংলাদেশে তো জঙ্গিদের উথান ঘটেইনি। বরং জঙ্গিবাদ নিরসন এবং দমনের জন্য বাংলাদেশ হয়েছে বিশ্বের একটি রোল মডেল রাষ্ট্র। বাংলাদেশ যেভাবে জঙ্গিবাদকে দমন করেছে, যেভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতায়নের জয় করেছে। তা বিশ্বে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। আজকের দিনে বিশ্বের যেকোন সভা সমাবেশ সেমিনারে বাংলাদেশকে নিয়ে চর্চা হয়। বলা হয় যে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কিভাবে একটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে হয় তার উদাহরণ হলো বাংলাদেশ। কিভাবে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদকে পিছনে ফেলে একটি শান্তির রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত হলো সে প্রশ্ন অনেকের। এই প্রশ্নে উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া যায় যে এর পেছনে মূল কারণটি হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার দর্শনের কারণেই বাংলাদেশের মুখে জঙ্গিবাদের কলঙ্ক লেপন করা যায়নি। তার নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ একটি শান্তি সম্প্রীতি এবং সৌহার্দ্যের রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে আবির্ভূত হয়েছে। তার কারেণেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের শঙ্কা দূর হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দেখা যাক হলি আর্টিজনের পর থেকে শেখ হাসিনার নেয়া ৫টি উদ্যোগ।

১. মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার করা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নির্দেশেনা এবং ব্যক্তিগত মনোযোগের কারণেই এই হলি আর্টিজনের মামলাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করা যায়নি। এই মামলাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা যায়নি। কয়েকজন জঙ্গিকে মেরে এই ঘটনাকে আড়ালে নিয়ে যাওয়ারও প্রক্রিয়া হয়নি। বরং দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়ায় এই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উম্মোচনের জন্য চেষ্টা করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাদেরকে সনাক্ত করা হয়েছে এবং মামলার বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। বিশ্বে দেখা যায় যে, যেখানেই জঙ্গিবাদের ঘটনা ঘটেছে সেখানেই যিনি জঙ্গিবাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাকে মেরে বা তাকে হত্যা করে এই মামলাকে ধামাচাপা দেওয়া হয়। এইসব ঘটনার মূল রহস্য উম্মোচিত হয় না। কিন্তু হলি আর্টিজন সেখানে একটি আশ্চর্য্য ব্যতিক্রম এবং এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে।

২. আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি: হলি আর্টিজন ঘটনার মধ্য দিয়ে একটি বিষয় পরিস্কার হয়েছিল যে, জঙ্গিরা অনেক বেশি তথ্য প্রযুক্তিতে সক্ষম এবং তারা অনেক বেশি বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এইজন্য বাংলাদেশের মতো একটি তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি। এই কাজটি সহজসাধ্য ছিল না। এরসঙ্গে অনেক অর্থনৈতিক বিনিয়োগের প্রশ্ন জড়িত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগের কারনেই বাংলাদেশ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সক্ষমতা অর্জন করে, ঢেলে সাজানো হয় কাউন্টার টেররিজম সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে। যারফএল হলি আর্টিজান হামলার ঘটনার পর যতবার জঙ্গি আক্রমণ বা হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে সবগুলো পরিকল্পনা বা আক্রমণ গোয়েন্দারা ভেস্তে দিতে পেরেছে বা আগাম খবর পেয়েছে। গোয়েন্দা এবং অন্যান্য সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনন্য ভুমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৩. জনগণের সচেতনতা: আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই বলতেন যে, শুধুমাত্র বিচার করে কিংবা শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে একটি দেশ থেকে জঙ্গিবাদে দমন করা সম্ভব না। জঙ্গিবাদ দূর করার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজন হলো জনগণের সচেতনতা এবং জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করা। জনগণ যদি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে তাহলেই সেটি হবে একটি দেশের শান্তির পূর্বশর্ত। হলি আর্টিজানের ঘটনার পর থেকে জনগণকে সচেতন করা, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করাসহ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা সৃষ্টির কাজটি করেছেন শেখ হাসিনা। যেকারণে আজকে সাধারণ মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদ প্রত্যাখানের মনোভাব তৈরি হয়েছে যা জঙ্গিবাদ দমনে সহায়তা করেছে।

৪. ধর্ম মানেই জঙ্গিবাদ নয়: ইসলাম যে শান্তির ধর্ম, ইসলাম যে জঙ্গিবাদকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না, কোনরকম সহিংসতাকে ধারণ করেনা এই কথাটি দৃড়চিত্তে বারবার উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ধর্ম এবং সন্ত্রাসবাদকে আলাদা করেছেন। তিনিই প্রথম সরকারপ্রধান যিনি বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। যেকারণে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বে ধর্মকে ব্যবহার করে যারা জঙ্গিবাদ তৎপরতায় লিপ্ত হতো তাঁরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

৫. জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলা এবং তথ্য আদান প্রদানে সহায়তা করা: হলি আর্টিজান ঘটনার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি জঙ্গিবাদকে কমন ইনিমি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যেখানেই জঙ্গিবাদ হোক সেখানেই প্রতিরোধ বা অন্যদেশের জঙ্গিদের বা বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসীদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় না দেয়ার তাঁর পূর্বের নীতিকে পুনর্ব্যক্ত করেন। এই কারণেই বিভিন্ন দেশের জঙ্গিরা তাঁরা যেমন বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে পারেনি তেমনি বাংলাদেশ থেকে অন্যদেশে যাওয়ারও সুযোগ পায়নি। এরফলে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সহমত এবং নেটওয়ার্ক গঠনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এইসব কারণেই পহেলা জুলাইয়ে হলি আর্টিজান ঘটনার পর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ জঙ্গিবাদে আতঙ্কিত কোন রাষ্ট্র নয়। বরং জঙ্গিবাদ মোকাবেলার ক্ষেত্রে এক সফল রাষ্ট্রের তালিকার শীর্ষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *