শেখ আমিনুর হোসেন, সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ:
সময়ের পালাবদলে গাছে গাছে আমের মুকুল ও বিভিন্ন ফলাদি গাছের ফুল জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের। ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে তাপমাত্রা। বসন্তের আগমনের সাথে সাথেই সাতক্ষীরা জেলার আম গাছগুলোতে এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে আমের মুকুল। তাই প্রকৃতিতে এখন বসন্তের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। নানান ফুলের সঙ্গে সুবাস ছড়াচ্ছে আমের মুকুল।
সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে আমের মুকুলের নয়নাভীরাম দৃশ্য ও আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ। প্রকৃতিকে মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা করে তুলেছে বাতাস। আমের মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস নাড়া দিচ্ছে প্রকৃতি প্রেমী মানুষের হৃদয়েও। বুনোফুল থেকে মৌমাছির দল গুনগুন করে ভিড় জমাতে শুরু করেছে এসব আমের মুকুলে। গাছের শাখায় শাখায় মুকুলগুলো চারদিকে যেন বসন্তের বার্তা বহন করছে। জেলার সব এলাকাতেই গাছে গাছে দেখা দিয়েছে আমের মুকুল।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে , জেলায় গত বছর ৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ করা হয়েছিলো তবে এ বছর ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এবার একটু আগেই প্রতিটি বাগানেই গাছে আগাম মুকুল এসেছে। এদিকে গাছে গাছে আগাম মুকুল আসায় বেজায় খুশি সাতক্ষীরার আম চাষিরা। তারা আম গাছের প্রাথমিক পর্যায়ের পরিচর্যাও শুরু করে দিয়েছেন ইতোমধ্যে। আমের মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলার নিয়মিত আমরে জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, আমরুপালি ও মল্লিকা জাতের আম গাছ বেশি। আম চাষিরা আশা করছেন, এবার আমের ফলন ভালো হবে। জেলার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামের আম চাষি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ বছরের আবহাওয়া আমের মুকুলের জন্য বেশ অনুকূলে। তাই একটু আগেভাগেই মুকুল এসেছে। গতবারের মতো এ মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়ার তেমন বিপর্যয়ও ঘটেনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, জেলায় গত বছর ৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়। গত বছর ৩২ হাজার মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি করা হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪০ হাজার মেট্রিক টন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আম গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হবে না। তবে ছত্রাকজনিত রোগে আমের মুকুল ও গুটি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বাগানে দুই দফা ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে ছত্রাক জাতীয় রোগ থেকে আমের মুকুলগুলো রক্ষা পাবে। সেই সাথে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
তিনি জানান, যেহেতু সাতক্ষীরার আম দেশের সকল অঞ্চলসহ বিদেশেও স্থান করে নিয়েছে, আশা করছি এ বছরও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা সম্ভব হবে। সেজন্য সাতক্ষীরায় আমের উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ভালো করতে কৃষি বিভাগ সব সময় চেষ্টা করবে। এছাড়া আমের ভালো ফলন নিশ্চিত করতে কৃষি বিভাগ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।