প্রযুক্তির মাধ্যমে গোপনে সংগঠিত হচ্ছে ছাত্র শিবির : সংগ্রহ হচ্ছে কর্মী | বাংলারদর্পন 

নিউজ ডেস্ক :

প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ছাত্রশিবির তৎপরতা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে অনলাইনে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছে শিবির।

ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পেজের মাধ্যমে সংগঠনটি সারা দেশে সদস্য সংগ্রহ করেছে। ‘আই সাপোর্ট শিবির’ ওয়েবসাইটে ‘দাওয়াতি সপ্তাহ’ পালনের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ৬ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত চলা দাওয়াতি সপ্তাহে লক্ষাধিক সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। নতুন সদস্যদের মধ্যে স্কুল-কলেজের ছাত্রই বেশি।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ না করে ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শিবির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। দাওয়াতি সপ্তাহ শুরুর আগের দিন রাতে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’ নামে ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে বলা হয়- ৬ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত শিবির অনলাইনে দাওয়াতি সপ্তাহ পালন করবে। এজন্য সব জনশক্তিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনার অনুরোধ করা যাচ্ছে।

‘আই সাপোর্ট শিবির’ ওয়েবসাইটে সমর্থক হতে ও দাওয়াতি কন্টেন্ট পেতে লিংক দিয়ে বলা হয়- ছাত্রশিবির সম্পর্কে জানতে এটি ভিজিট করুন। শিবিরকে ফলো করতে টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও ফ্লিকারে শিবিরের পেজের লিংক দেয়া হয়। এতে শিবিরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, শিবির অনলাইন লাইব্রেরি ও ছাত্র সংবাদের লিংক রয়েছে। ‘আই সাপোর্ট শিবির’ ওয়েবসাইটে সমর্থক ফরম নামে একটি ফরম রয়েছে। ফরমের লিংকে শিবিরের অফিসিয়াল পেজসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে প্রথমে আসে সমর্থক হওয়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন (একট চিহ্ন)। এরপর সমর্থক ফরমে চলে যান।

ফরমে নিজের নাম, পিতার নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্লাস, শ্রেণী, বর্ষ, বিষয় বা বিভাগ, মোবাইল ফোন নম্বর-১, মোবাইল ফোন নম্বর-২, ইমেইল অ্যাড্রেস, ফেসবুক আইডি, জেলা, থানা ও ছবি সংযুক্ত করার অপশন রয়েছে। এতে লেখা আছে- ‘বি. দ্র. আপনার দেয়া সব তথ্য নিরাপদ থাকবে, ইনশাআল্লাহ।’

জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বাধা পেয়ে শিবিরের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম অনলাইনে শুরু করে। হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে নেতারা সাংগঠনিক যোগাযোগ রাখছে। সুযোগ পেলেই তারা বৈঠকে মিলিত হচ্ছে। অনলাইন লাইব্রেরির মাধ্যমে সংগঠনের আদর্শ প্রচার করছে। লাইব্রেরিতে বিভিন্ন জিহাদি বই রাখা হয়েছে। বইগুলো অনলাইন অ্যাপস আকারেও সংকলন করা হয়েছে। এছাড়া পিডিএফ আকারে বইগুলো নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন ও প্রচার সম্পাদক খালেদ মাহমুদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ৪৮/১-এ পুরানা পল্টনের ল্যান্ডফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (সাইবার ক্রাইম) মো. আলিমুজ্জামান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করা হচ্ছে। যেসব পেজ, আইডি বা সাইট থেকে প্রপাগান্ডা, উসকানি, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে সাইবার স্পেস অনেক বড়। সবকিছু সব সময় চোখে পড়ে না। সবকিছু নজরদারিতে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং কার্যক্রম অনেক শক্তিশালী হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের সব ধরনের তৎপরতা মনিটরিং করা হচ্ছে। মনিটরিং ইউনিটগুলো যথাসময়ে হাইকমান্ডকে অবহিত করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *