জোড়া পুলিশ খুন মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যুর পর পৌঁছালো খালাসের আদেশ

ব্যুরো চীফ সাতক্ষীরা >>

সকালে মৃত্যু। আর বিকালে পৌঁছালো ফাঁসির দন্ড থেকে তার খালাসের আদেশ।

সাতক্ষীরার জোড়া পুলিশ খুন মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি ওবায়দুর রহমান ওরফে অবেদ আলি খুলনা কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। ছয় মাস আগে তিনি উচ্চ আদালতের আদেশে এ  মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছিলেন। তার কারামুক্তির আইনগত কাজ শেষ হবার আগেই ১৩ বছর জেলে থাকার পর  রোববার  মারা যান তিনি।

রাতে তার লাশ নিয়ে আসা হয় নিজ বাড়ি সাতক্ষীরার কুখরালিতে। অবেদ আলি ওই গ্রামের রজব আলির ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে শহরের ছফুরন্নেসা কলেজের সামনে ফটিক বাবুর বাড়ির কাছে দুই পুলিশ কনস্টেবল ফজলুল হক ও আবদুল মোতালেব সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। এ সময় আহত হন কনস্টেবল আবদুল আহাদ। তারা বাইসাইকেলে বাঁকাল এলাকায় ডিউটি সেরে রাত সোয়া ২ টার দিকে কর্মস্থল ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়িতে ফিরছিলেন।

২০০৬ সালে এ মামলায়  আসামি রায়হানুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও ওবায়দুর রহমান ওরফে অবেদ আলিসহ তিনজনকে মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। এ ছাড়া আরও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। ২০১১ সালে এই রায়ের  বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করলে  ওবায়দুর রহমান রহমান অবেদ আলি খালাস পান। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপীল করলে  গত ১১ এপ্রিল খালাসের আদেশ বহাল থাকে। তবে খালাসের এই আদেশের কপি কারাগারে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়।

অবেদ আলির ভাই হাবিবুর রহমান জানান, আদালত থেকে এই খালাসের আদেশ কারাগারে না পৌঁছানোয় তাকে ছয় মাসেরও বেশি সময় আটক থাকতে হয়। এরই মধ্যে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। রোববার সকালে খুলনা কারাগারে মারা যান তিনি। একই দিন বিকালে তার খালাসের আদেশ পৌঁছায় সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতে।

মেয়ে নিলুফা সুলতানা টুম্পা জানায়, কারাগারে তার বাবা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ঠিকমত চিকিৎসা করানো হয়নি। বাবার রক্তের প্রয়োজনে তাকে রক্ত দিতে দেয়া হয়নি।

ছেলে আশিকুর রহমান শাওন জানায়, দীর্ঘদিন কনডেম সেলে থেকেই তার পিতা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। সে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার দাবি করে জানায়, তার বাবার মত আর কোন পিতাকে যেন এভাবে আর জীবন দিতে না হয়।

স্ত্রী আমিবয়া খাতুন জানান, বিনাদোষে তার সন্তানরা বাপহারা হয়েছে। কে দেখবে তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *