সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই নিরাপদ সড়কের আন্দোলন?

নিউজ ডেস্ক :

গত ২৯ জুলাই বাস চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার জের ধরে নিরাপদ সড়ক সহ ৯ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। কোমলমতি এই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উঠে আসা দাবিগুলোর যৌক্তিকতা মেনে নিয়ে তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে তাদের বেশিরভাগ দাবি বাস্তবায়নের কার্যক্রমও শুরু করে দিয়েছে সরকার।

এই আন্দোলনকে কে কেন্দ্র করে আল জাজিরা টেলিভিশনে উস্কানিমূলক সাক্ষাৎকার দেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের অযৌক্তিক সমালোচনা করেন এবং এই আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলন হিসেবেও অভিহিত করেন। তিনি তার এই সাক্ষাৎকারে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে সরাসরি অনির্বাচিত সরকার বলে অভিমত দেন। এছাড়া আন্দোলন চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের উস্কানিমূলক সংবাদ ও ভিডিও পোস্ট করে আন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অপচেষ্টা করেছেন। পরবর্তীতে তাকে এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে গ্রেফতারের পরই বেরিয়ে আসে বিভিন্ন ধরণের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাত দিয়ে জানা যায়, শাহিদুল ইসলাম ২০১৪ সাল থেকেই পাবলিক সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনা করে আসছিলেন। যার প্রমাণ পাওয়া যায় তার বিভিন্ন বিদেশী সংস্থার কাছে বিভিন্ন পাঠানো মেইল থেকে। সেসব মেইল ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখা যায় তিনি নেদারল্যান্ড ভিত্তিক safe crossing নামের একটি সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনা করে আসছিলেন। এছাড়া খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাথে বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনেরও প্রমাণ মিলেছে তার মেইল থেকে।

পাশাপাশি নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে পর্দার পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ারও প্রমাণ মিলেছে তার মেইল, ওয়াটসএপ ও মোবাইলের মেসেজ ঘাঁটাঘাঁটি করে। এছাড়া তিনি আন্দোলনের বিভিন্ন মিথ্যা সংবাদ বিদেশী মিডিয়ার কাছে সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক ভাবে সরকারকে চাপে ফেলারও ষড়যন্ত্র করেছেন।

শহিদুল আলম ও তার স্ত্রী সহ তার মালিকানাধীন পাঠশালার একাধিক কর্মীদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। তারা বিভিন্ন স্পট থেকে আন্দোলনের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতো এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। আন্দোলনের শুরুতেই শহিদুল আলম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে student protest নামে একটি ওয়াটসএপ গ্রুপ খুলেন। এই গ্রুপের মাধ্যমেই সবাই আন্দোলন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করত এবং সবাইকে আন্দোলন সম্পর্কিত দিক নির্দেশনা দেয়া হতো।

এছাড়া ইস্পাহানি গ্রুপের কর্ণধার সাজিদ ইস্পাহানীর মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ ছিল তার, যার প্রমাণ পাওয়া গেছে তার ইমেইল থেকে সাজিদ ইস্পাহানীর কাছে পাঠানো বিভিন্ন মেইলে।

শুধু নিরাপদ সড়ক আন্দোলনই নয় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার মেইল, মোবাইলের টেক্সট মেসেজ পর্যালোচনা করে কোটা আন্দোলনেও তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে তবে কি কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কি একই সুঁতোয় গাঁথা? যার উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। আর সেটি হচ্ছে সরকারকে বেকায়দায় ফেলানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *