নিউজ ডেস্ক: বছর ঘুরে আবার এসেছে সিয়াম সাধনার পবিত্র মাস রমজান। ইসলামের প্রধান পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি স্তম্ভ হল রোজা। এই মাসে মুসলমানরা সারাদিন রোজা রাখেন। মন্দ কাজ এড়িয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত লাভের জন্য নামাজ-বন্দেগিতে সচেষ্ট থাকেন। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও এর ব্যতিক্রম নন।
তবে কিছু অসৎ মানুষ ও অসাধু ব্যক্তিদের অতি লোভের কারণে রমজান মাস যেন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাড়ায়। ফলে ইবাদত বন্দেগীতে মনোযোগের পরিবর্তে সাংসারিক প্রয়োজন মেটাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়। তাই সাধারণ মানুষের ইবাদত বন্দেগী নির্বিঘ্ন করতে প্রতিবারের মতো এবারও বেশ কিছু পদক্ষপ গ্রহণ করেছে সরকার।
রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পবিত্র রমজান উপলক্ষে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয়ের লক্ষ্যে টিসিবি’র মাধ্যমে স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করে চিনি, ছোলা, সয়াবিন তেল ও খেজুর সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। চলতি ১৫ মে থেকে সারাদেশে ১৮৫টি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রয় শুরু করা হয়েছে।
এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে প্রস্তুতি নিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবিও। রমজানের আগেই সারা দেশে নিজস্ব ডিলার ছাড়াও বিভাগীয় ও জেলা সদরে নিজস্ব ট্রাক এবং নিজস্ব খুচরা বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে মসুর ডাল, চিনি, ছোলা, ভোজ্য তেল ও খেজুর বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি।
জানা যায়, এবার সিটি করপোরেশন এবং জেলা পর্যায়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিমগুলো ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধকরণ ও অসাধু ব্যবসায়ীদের দমনে প্রয়োজনে জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তি আরোপ করবে। সারাদেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা চলমান থাকবে। এ সকল মোবাইল কোর্ট অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতারোধে জরিমানা এবং বিভিন্ন আইনানুগ শাস্তির মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা করবে।
এছাড়া জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পেও বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রমজান মাস ও ঈদ উপলক্ষে সড়ক, নৌ ও রেলপথ যানযাজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
ভ্রমণ নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখার জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশিসহ জনবহুল এলাকায় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, স্থানীয় দুষ্কৃতিকারী বা ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রমজান মাসে জনগণের নিরাপত্তার জন্য বাজার, শপিং মল, বিপণি বিতান, মার্কেট, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ টার্মিনালে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি, নাশকাতমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধসহ নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবারাত্রি পুলিশি টহল এবং নিয়মিত অভিযানও অব্যাহত রয়েছে।