বাংলারদর্পন
পৃথিবীর সবচাইতে যন্ত্রনাদায়ক অনুভূতিটা হল পরিবার ও প্রিয় মানুষদের থেকে দূরে একাকি থাকার অনুভূতি। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে প্রবাসীরা দিনের পর দিন এই যন্ত্রনাদায়ক অনুভূতি নিয়েই বসবাস করেন। তাদেরও ইচ্ছে করে, সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিবারের সদস্যদের সাথে চা খেতে খেতে একটু খুনসুটি করতে। তাদেরও ইচ্ছে করে মায়ের হাতের অপূর্ব সব রান্না খেতে, তাদেরও ইচ্ছে করে নিজের বৌ-বাচ্চা বা প্রিয় মানুষদের নিয়ে সুন্দর কোন জায়গায় বেড়াতে যেতে। তারাও চায় অসুখ হলে মা-বাবা যেন তাদের কপালে একটু হাত বুলিয়ে দেয়, প্রিয় মানুষটা যেন আদর করে ওষুধ খাইয়ে দেয়।
কিন্তু হায়, তাদের কপালে এসব জোটে না। কারন, ঘুম থেকে উঠেই অচেনা কোন দেশে জীবন যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয় তাদের। সারাদিন অমানবিক পরিশ্রম শেষে, ক্লান্ত-বিধ্বস্ত হয়ে নিজ ডেরায় ফিরতে হয়। তারপরও তারা কখনোই তাদের এই কষ্টের কথা কাউকে জানতে দেয় না। মাস শেষে তাদের কস্টে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই তারা সব চাইতে বেশি আনন্দ পান। কারন, এই পরিবারের জন্যই তাদের এত সংগ্রাম, এত ত্যাগ-তিতিক্ষা, এত দূরের প্রবাসে থাকা।
পরিবারের জন্য, দেশের জন্য আত্মত্যাগকারি এসব বীর সৈনিকদের জানাই হাজারো সালাম। এসব অভাগা মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেকে সুখী মনে করতাম। কিন্তু আমার ক্ষমতা সীমিত, তাই মন চাইলেও কিছু করতে পারছি না।
তাই আমার লেখার মাধ্যমেই এই দেশ গড়ার কারিগরদের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ভালো থাকুন আপনারা,
আপনাদের জীবনটা ভরে উঠুক হাসি-আনন্দে। সৃষ্টিকর্তার নিকট এই দোয়াই করি সবসময় 😊
লেখিকাঃ আয়েশা সিদ্দিকী রুমানা