ঝিনাইদহে দাম বেড়েছে প্রায় সব জিনিসের : নেই প্রশাসনিক পদক্ষেপ

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহ শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় সব জিনিসের। গত সপ্তাহ চিকন চাল প্রতি কেজি ৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫৭ টাকা। আর মোটা চালের দাম কেজিতে ২টাকা কমে দাড়িয়েছে ৪৪টাকায়।

এ দিকে লাগামহীন গমের আটার দাম। গত সপ্তহে এক কেজির (প্যাকেট) আটা ৩৪ টাকা থাকলেও রোববার ৩৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে আরেক ধাপ বেড়ে ৪২ টাকা হতে পারে বলছেন বিক্রেতারা। আর ময়দার দাম বড়েছে কেজিতে ৯টাকা। সেই সাথে কেজিতে ৩ টাকা
বেড়েছে চিনির দাম।

গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৫৪ টাকায়। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী ৫দিনের ব্যবধানে এই সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ।

তবে বাজারে ডিমের দাম হালিতে ৩টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে যে ডিমের দাম ছিল ৩৮ টাকা, বর্তমানে ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫
টাকা হালি। এদিকে তেজপাতা প্রতি কেজি ২০০ টাকা, আদা ৮০ থেকে ৯০ টাকা

কেজি হলেও রোববার বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি। আর রসুন কেজিতে ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে দাড়িয়েছে ৬০ টাকা। আলুর দাম সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেয়াজের দাম। সপ্তাহের
ব্যবধানে কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৬৫টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সবজির
বাজার রয়েছে চড়া।

ঝিনাইদহের নতুন হাটখোলা বাজারে বাজার করতে এসে বেসরকারি
চাকরিজীবী শরিফুল ইসলাম বলেন, বাজার থেকে পণ্য কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। মানুষের
আয়ের যে অবস্থা তার সাথে ব্যায়ের কোনো মিল নেই। ক্রেতারা এক দোকান থেকে অন্য
দোকানে ঘুরছেন একটু কম দাম পাওয়ার জন্য। মানুষ বাজারের এমন উত্তাপ টের পাচ্ছেন
হাড়ে হাড়ে।

আব্দুল্লাহ নূর তুষার নামের এক দিনমজুর বলেন, আমাদের আয়ের থেকে ব্যয়
বেশি হচ্ছে। দিনমুজুরি করে সারাদিন যে টাকা আয় করি বাজার করতে গেলে সব শেষ।
তাহলে চলবো কী করে। সংসারে আরো খরচ রয়েছে।

বাজার করতে এসে সোহেল রানা বলেন,
সপ্তাহ ধরেই উর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের দাম। এতে কারো যেনো কোন মাথা ব্যাথা নেই।
প্রশাসনিক পদক্ষেপ না থাকায় হতদরিদ্ররা পড়ছে বিপাকে। খাদ্য নিরাপত্তা ও মার্কেটিং
অফিসারের বাজার মনিটরিং না থাকায় ভোক্তারা পদে পদে জিনিস কিনে ঠকছে। পরিবার
পরিজন নিয়ে দুবেলা দু মুঠো খেয়ে বাচার উপায় থাকছে না মানুষের। মহামারীর কারণে
কপাল পুড়েছে প্রতিটি মানুষের।

যাদের চাকরি চলে গেছে, তাদের বেশির ভাগই চাকরি
ফিরে পাননি। এই পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের বাজারের আগুন মুল্যে মানুষ পুড়ে মরছে।
সকাল থেকে রিকসা চালিয়ে যে আয় হয়েছে তাই দিয়ে বাজার করতে এসে দেখেন গত
সপ্তাহের চেয়ে দাম বেড়েছে সব কিছুর।

আমাদের আয় না বাড়লেও দিন দিন পাল্লা দিয়ে
বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। তাই দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে ভালো নেই আমাদের মত
খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। একটু মুরগীর গোস্ত, সবজী কিনবো তার দামও আকাশ
ছোঁয়া। বাজার করতে এসে এ ভাবেই কথা গুলো বলছিলেন রাজ্জাক হোসেন নামের এক
রিকসা চালক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *