ঝিনাইদহে ড্রেনের পঁচা দুর্গন্ধ ও মলমুত্রযুক্ত পানি ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তায়, প্রতিকার নেই!

ভিআইপি এলাকায় নাক চেপে চলাচল, দূগন্ধযুক্ত পানি সড়কে!

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহ শহরের ভিআইপি এলাকার মানুষ এখন নাক চেপে চলাচল করেন। ড্রেনের পঁচা দুর্গন্ধ ও মলমুত্রযুক্ত পানি রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষ বাসাবাড়ির তাদের পায়খানার পানি ড্রেনে যুক্ত করছে। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে ড্রেনের পানি রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে।

চাকলাপাড়ার এলাকার মাহাবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) সড়ক, যার দুই পাশে রয়েছে সরকারি বড় কর্মকর্তাদের বাসভবন। স্থানীয় সাংসদ, জেলা জজ, জেলা যুগ্ম জজ, পুলিশ সুপার, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাস করেন এই সড়কেই। একাধিক
সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজও ভাড়া থাকেন এই এলাকায়। বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ীর বাসাও রয়েছে সড়কটিতে। পাশের সড়কে রয়েছে ঝিনাইদহ সার্কিট হাউজ। অথচ এই সড়কটি দিয়ে অধিকাংশ সময় চলাচলকারীদের নাক-মূখ চেপে চলাচল করতে হয়।

জনৈক রবিউল ইসলামের পাঁচতলা বাসার ময়লা পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা না থাকায় মাঝে মধ্যেই হাউজ উপচে সড়কে প্রবেশ করছে। এই পানি সড়কে জমে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নোংরা পানি মাড়িয়ে পথচারী থেকে শুরু করে সবাইকে কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। এই অবস্থা দীর্ঘদিনের হলেও প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের চাকলাপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুব উদ্দীন আহম্মদ (বীর বিক্রম) সড়টি তারেক মোড় থেকে বের হয়ে একটি নবগঙ্গা নদীতে মিশেছে।

আরেকটি শাখা পাড়ার মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে চাকলাপাড়া হাটখোলা এলাকায় এসেছে। অন্য আরেকটি শাখা বিহারী পট্টি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। এই সড়কগুলোর দুই পাশে অসংখ্য বহুতল ভবন রয়েছে। রয়েছে ঝিনাইদহ-২ আসনের সাংসদ তাহজীব আলম সিদ্দিকীর
বাসভবন। আরো রয়েছে জেলা জজ, জেলা যুগ্ম জজ ও পুলিশ সুপারের সরকারি বাসভবন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর সরকারি বাসাটিও এই সড়কেই। শৈলকুপা উপজেলার পাচপাকিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম ১২ বছর আগে তিনি বহুতল ভবন নির্মান করেন। বাড়ির সামনে দুইটি উন্মক্ত হাউজ রয়েছে। বাড়ির পানি নিষ্কাষনের সঠিক
কোনো ব্যবস্থা নেই। যে কারনে সামনের ওই ছোট ট্যাংক থেকে পানি উপচে সড়কে পড়ছে। পথচারী আমিরুল ইসলাম জানান, গোটা বর্ষা মৌসুম তাদের এই সড়ক দিয়ে কষ্ট করে চলাচল করতে হয়। ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানির মধ্যে দিয়ে পাঁয়ে হাটাও যায় না।

তারপরও উপায়ন্তর না পেয়ে চলাচল করতে হয়। এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল হক জানান, তাদের এলাকায় পৌরসভার কোনো ড্রেন নেই। যে কারনে সবাই নিজেদের মতো করে পানি নিষ্কাষন করে থাকেন। পথচারী রিপন কুমার বসু জানান, ময়লা পানি মাড়িয়ে তাদের চলতে
হয়। এই স্থানে এলেই নাক-মূখ চেপে ধরা ছাড়া উপায় থাকে না। জেলা জজ আদালতের নাজির শেখ মোঃ আব্দুল হালিম জানান, সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়কেই জেলা ও দায়রা জজ সহ বেশ কয়েকটি সরকারি কর্মকর্তার বাসভবন।

যারা বাসা-বাড়ির ময়লা পানির মধ্য দিয়ে চলাচল করছেন। এ বিষয়ে ভবনের মালিক রবিউল ইসলাম জানান, এলাকায়
কোনো ড্রেনের ব্যবস্থা না থাকায় তিনি গোসলের আর রান্নার পানি হাউজে দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাসায় লোকসংখ্যা বেশি হওয়ায় দ্রুত সে হাউজটি ভরে যায়। যা তিনি পয়সা খরচ করে পৌরসভার গাড়িতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেন। এ ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে গাড়ি পেতে
সমস্যা হলে হাউজ উপচে পানি রাস্তায় চলে যায়।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগের প্রধান কামাল উদ্দিন জানান, ওই এলাকাতে পৌরসভার কোনো ড্রেন নেই। তবে
তারা ড্রেন করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। দ্রুতই ড্রেন হবে বলে তিনি আশা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *