রাণীনগরে পাগলীর মোড় সেতুর সংযোগ সড়ক সম্পূর্ণ না হওয়ায় এলাকাবাসির দুর্ভোগ

 

 

এ বাশার চঞ্চল, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে বেতগাড়ী-পাগলীর মোড় নামক স্থানে ছোট যমুনা সেতুর নিমার্ণ কাজ শেষ হলেও সেতুর দুই পার্শ্বের সংযোগ সড়কের কাজ সম্পূর্ন না হওয়ায় এলাকাবাসি চলাচলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে সেতুটির নিমার্ণ কাজ শেষে দাপ্তরিক ভাবে হস্তান্তর হতে না হতেই রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার ইট ভাটার মালিকরা মিরাট ইউপি’র আতাইকুলা মাঠ থেকে বেপোরোয়া ভাবে মাটি কেটে ট্রাক্টর যোগে দিনরাত ২৪ ঘন্টা এই নব-নির্মিত সেতু ব্যবহার করে ভাটাতে মাটি নিয়ে যাওয়ায় শুরুতেই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রতিদিন কমপক্ষে মাটি বুঝায় শতাধিক ট্রাক্টর দ্রুত গতিতে চলাচলের কারণে ধুলো-মাটিতে সেতুটির সৌন্দয্য হারাতে বসেছে। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজরদারির অভাবে সেতুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকা প্রকাশ করছে এলাকাবাসি। সেতুর দুই পার্শ্বে সংযোগ সড়কে ইটভাটার মালিকরাই তাদের ব্যবসার সুযোগ হাসিলের লক্ষ্যে নিজ নিজ উদ্দ্যোগে কিছু মাটি দিয়ে সংযোগ সড়ক ট্রাক্টর চলাচলের উপযোগী করলেও এলাকাবাসি চেয়ে আছে কবে এই সমান্য কাজ শেষ করে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে রাণীনগর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর বেতগাড়ী পাগলীর মোড় নামক স্থানে চলাচলের জন্য অত্র এলাকার জনগনের প্রাণের দাবি ছিল একটি বড় সেতু। সেই দাবির সাথে একত্বা ঘোষনা করে নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি দুই পাড়ে বসবাসরত্ব মানুষের সাথে নির্বিড় সর্ম্পক তৈরির লক্ষ্যে এখানে একটি সেতু নির্মাণের ঘোষনা মোতাবেক স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু প্রকল্প কর্মসূচির আওয়াতাই ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪ শ’ ৫৭ টাকা ব্যয়ে ১ শ’ ১৫ মিটার দীর্ঘ একটি সেতুটি নিমার্ণের জন্য গত ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে দরপত্র আহবান করে যার বিজ্ঞপ্তি নং-০৯, প্যাকেজ নং- এলবিসি/এনএও/০৪। সেই মোতাবেক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নওগাঁর পশ্চিম চকদেব পাড়ার এএস-এসআরআই জেভি নামক নিমার্ণকারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেলে গত ১০/০৯/২০১৩ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী নওগাঁ ওই প্রতিষ্ঠানকে ২১/০৪/২০১৫ তারিখে সমদয় কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য কার্যাদেশ প্রদান করলে স্থাণীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি ০১ নভেম্বর ২০১৩ সালে এক জাকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেতুটি নিমার্ণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করে। নির্মাণ কাজের শুরুতেই সেতুর পূর্ব পাড়ে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্মাণকারি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রথম দিকে স্থাণীয় জমির মালিক কাজ করতে বাঁধা প্রয়োগ করলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াই।

উপজেলার গোনা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান হাসান জানান, এলাকাবাসির চলাচলের অসুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে আমি সর্ব প্রথম স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে এখানে একটি সেতু নিমার্ণের দাবি জানাই। সেই মোতাবেক সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষে সেতুটি নির্মাণ হলেও অজানা কারণে দুই ধারের সংযোগ সড়কের কাজ সম্পূর্ণ না করায় সর্বসাধারণ ঝুকি নিয়েই সেতু পারাপার হচ্ছে। প্রায় মাস খানিক ধরে কতিপয় ইট ভাটার মালিকরা অবাধে ট্রাক্টর ভর্তি মাটি নিয়ে এই সেতু ব্যবহার করায় নতুন সেতুটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ট্রাক্টর ব্যবহার বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছি।

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান মিঞা জানান, বেতগাড়ী-পাগলীর মোড় সেতুটি নিমার্ণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহনের জটিলতার কারণে সংযোগ সড়কের কাজ পুরোটা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দুই পাশের সংযোগ সড়কে কিছু মাটি দেওয়ায় ইতিমধ্যেই জনসাধারণ চলাচলের সুবিধা পাচ্ছে। খুব শীঘ্রই এইচবিবি কাজের মাধ্যমে চলাচলের উপযোগী করে জনস্বার্থে খুলে দেওয়া হবে।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *