দীর্ঘমেয়াদী সুবিধার জন্য খালেদার বন্দিত্বে খুশি মির্জা ফখরুলগং

নিউজ ডেস্ক: খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে ব্যর্থতা, দলীয় ভঙ্গুর অবস্থা, নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপির ব্যর্থতার জন্য দলটির হাতে গোনা কজন সিনিয়র নেতা দায়ী বলে মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নিজেদের ব্যক্তিগত লাভের কথা চিন্তা করেই মূলত বিএনপিকে দুর্বল দলে পরিণত করেছেন মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, মওদুদ আহমদ, শিমুল বিশ্বাস ও রিজভী আহমেদের মতো নেতারা।

ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা করতেই মূলত খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন ও সরকার বিরোধী আন্দোলনকে দমিয়ে রেখেছেন এসব নেতারা। বিএনপিকে গৃহপালিত দলে পরিণত করে সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা আদায় করতেই সিনিয়র এই নেতারা মিলিতভাবে বিএনপিকে ইচ্ছা করে দুর্বল করে রেখেছেন বলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

সূত্র বলছে, বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দল এতটা দুর্বল নয় যে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে ভয় পাবে। অথচ দলটির নেত্রী দুর্নীতির মামলায় আট মাসের অধিক সময় ধরে জেল হাজতে। দলটির সিনিয়র নেতারা প্রায় প্রতিদিন প্রেস ব্রিফিং করে, চিঠি লিখে অভিযোগ করে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে কোনো সিনিয়র নেতার নূন্যতম ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায় না। মুক্তির বিষয়ে দুএকটা কথা বলেই সিনিয়র নেতারা যে যার মতো ব্যবসা-বাণিজ্য, কাজ-কর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অথচ বিএনপির শাসনামলে উপরোক্ত নেতারা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কোটি কোটি টাকা নামে-বেনামে বিদেশে পাঠিয়ে বিএনপির পাপের বোঝা ভারি করেছেন এই নেতারা। অথচ সেই পাপের বোঝা বহন করতে হচ্ছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে। সরকারি দলের সাথে গোপনে আঁতাত করে সিনিয়র নেতারা রাজা-বাদশার হালে দিন পার করছেন। দুঃখের বিষয় হল, কোনো সিনিয়র নেতা বিএনপিকে ভালবেসে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বাস্তবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে গেলে তাকে মির্জা ফখরুলদের রোষানলে পড়তে হয়। বিএনপির ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে দলটির সিনিয়র নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে গেলে মির্জা ফখরুল নাকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগসাজোস করে তাকে ধরিয়ে দেন। মির্জা ফখরুলরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চান না । খালেদার কারাজীবনকে পুঁজি করে নিজেদের ভবিষ্যত গোছাতে চান সিনিয়র নেতারা। খালেদার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গোপন তথ্য পাচার করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। দলের ভেতর যদি বেইমান, দুমুখো সাপ থাকে তাহলে সেই দল অন্তত রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারে না।

এই বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেন, বিএনপির আজকের করুণ ও মরণদশার জন্য দলটির সিনিয়র নেতারা দায়ী। ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার, দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা আদায়, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে রাখার বিনিময়ে নিজেদের নিরাপদ রাখার প্রয়াসে মত্ত রয়েছেন একাধিক সিনিয়র নেতা। মুখে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইলেও অন্তরে অন্তরে খালেদাকে জেলে রেখে সরকারের সাথে দরকষাকষি করাকে বেশি লাভজনক মনে করেন দলটির নেতারা। আমরা সকলেই জানি, বিএনপির গোপন বৈঠকের কথা প্রতিবার ফাঁস হয়ে যায়। দলটির প্রতি কারো কোনো রকম দায়বদ্ধতা বা ভালবাসা নেই। নেতাকর্মীরা বিএনপিকে ইচ্ছামতো বিক্রি করছে, শুধু মাত্র নিজেরা ভাল থাকার জন্য। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এই নেতারা প্রতিনিয়ত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের চাটুকারিতায় ব্যস্ত থাকতেন। সময়ের ফারাকে খালেদা, তারেক রহমান ও বিএনপি আজ তাদের কাছে গুরুত্বহীন। হায় রে রাজনীতি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *