মাদক বিরোধী অভিযান : দেশবাসীর সাধুবাদ | বাংলারদর্পন

নিউজ ডেস্ক :

মাদকাসক্তি এক সর্বনাশা ব্যাধির নাম। মাদকের ব্যবহার ধ্বংস করে দেয় ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রকে। সরকার মাদকের ব্যবহার থেকে প্রজন্মকে বাঁচাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর তাই দেশব্যাপী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে এগোচ্ছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মাদক বিক্রেতারা সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা বিভাগওয়ারি এ তালিকা নিয়ে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো মূল্যে মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে বলেছেন। মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সমানতালে অভিযান চলবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, অতীতে ভারত থেকে বাংলাদেশে কোকেন, ফেনসিডিল ও হেরোইন পাচার হয়ে আসত। কিন্তু দৃঢ় কূটনীতিক তৎপরতার কারণে তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এখন প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে সহজে পাচার হয়ে আসা ইয়াবাতে দেশ সয়লাব হয়ে গেছে। এসব রোধে বারবার আবেদন জানিয়েও মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।দেশজুড়ে মাদকের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগের কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ মেধাকে রক্ষা করতে মাদক দমন করতেই হবে। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ-র্যাব সর্বত্র অভিযান পরিচালনা করছে এবং এটা সবসময় চলবে। সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মাদক নির্মূলের নামে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করতে যায়, তখন তারা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পাল্টা গুলি ছোড়ে।’ প্রসঙ্গত, সোমবার পর্যন্ত যে হিসাব জমেছে, তাতে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত দুই হাজারের অধিক মাদক ব্যবসায়ীকে এক থেকে ছয় মাসের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রসঙ্গত, সোমবার পর্যন্ত ১০ দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২৯ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।

মাদকের বিরুদ্ধে বর্তমানে হার্ড লাইনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশব্যপী ১০ লাখ পোস্টার-লিফলেট বিতরণের কথা জানিয়ে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে জাতিগত যুদ্ধ করতে হবে। ৭১ সালের পর বিভিন্ন ঐক্যবদ্ধ যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছি। এবারও আশা করি এর একটা ভালো ফলাফল পাবো, মানুষ বিজয়ী হবে’। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকের খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে ডিলার সে যেই হোক, তাকে এ পেশা ছাড়তে হবে।

আমার, আপনার, আমাদের -সবার ঐকান্তিক সচেতনতা আর সহায়তায় পারে মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে। আসুন, মাদক নির্মূলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। দেশকে মাদক মুক্ত করে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ, সুন্দর, বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *