নিউজ ডেস্ক:
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এর নাম ব্যবহার করে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করায় আদালত খালেদাকে ৫ বছরের সাজা দিয়েছে। যার ফলে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাদণ্ড ভোগ করছেন খালেদা। কিন্তু খালেদার অপরাধের সাথে বিন্দু পরিমান সম্পর্ক না থাকার পরেও খালেদার সাথে কারাভোগ করছেন খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা বলে পরিচিত ফাতেমা বেগম।
খালেদার আইনজীবী এবং বিএনপির দাবির প্রেক্ষিতেই মূলত ফাতেমাকে খালেদার সাথে কারাভোগ করতে হচ্ছে। অবাক মনে হলেও সত্য পৃথিবীর ইতিহাসে খালেদা একমাত্র আসামি যিনি কারাদণ্ড ভোগ করা অবস্থায় বাইরে থেকে গৃহপরিচারিকা সাথে রাখার সুবিধা পেয়েছেন।
জেলকোড অনুযায়ী একজন দণ্ডিত আসামি কোনোভাবেই এই সুবিধা নেওয়ার অধিকার রাখে না।কিন্তু তবুও ফাতেমা বিনা অপরাধে কারা ভোগ করছেন।
খালেদা জিয়ার দেখভাল করার জন্য কারাভোগ করতে থাকা ফাতেমারও খালেদার মতো নিজস্ব পরিবার রয়েছে। তার সন্তানরা মায়ের অপেক্ষায় দরজার বসে থাকে। কিন্তু তারা জানে না, বিনা অপরাধে কারাভোগে থাকা তাদের মা কবে ছাড়া পাবে। এক অনিশ্চিত দুশ্চিন্তা এবং উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে ফাতেমার পরিবার। ‘দরিদ্র’ হওয়ার অপরাধে ফাতেমার পরিবার কোনোরকম প্রতিবাদও করতে পারছে না।
এ প্রসঙ্গে ফাতেমা বেগমের এক প্রতিবেশি বলেন, ‘ফাতেমা তার সন্তানদের খুব ভালোবাসে। সে যখন জানতে পারে খালেদা জিয়ার অপরাধের সাজা হিসেবে বিনা অপরাধে তাকেও কারা ভোগ করতে হবে, সে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে। কিন্তু উপায় না পেয়ে জেলে যেতে রাজী হয়। কারণ বিএনপির নেতাকর্মীদের চাপের মুখে ফাতেমার আর কিছু করার ছিলো না’।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তার বিদেশ সফরের বিষয়ে অবগত করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও নিরপরাধ ফাতেমার কারাভোগের ব্যাপারে কথা বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খালেদার সুবিধা এবং দেখভাল করার কথা বিবেচনা করে একজন নিরপরাধ মানুষকে কারাগারে পাঠানোর উদ্যোগকে এক ধরণের অন্যায় বলেও অভিহিত করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিরপরাধ ফাতেমার কারাভোগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর এমন অভিমতের পর সমাজের বিবেকবান মানুষজন অবিলম্বে নিরপরাধ ফাতেমাকে মুক্তি দিয়ে তার সন্তানদের কাছে ফেরত দেওয়ার আবেদন জানান সরকারের কাছে। বিনা অপরাধে ফাতেমাকে কারাভোগে পাঠানোর জন্য ফাতেমাকে সরকারের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি করেন অনেকে।
সব থেকে অবাক করার মতো ব্যাপার হচ্ছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কোনো মানবাধিকার সংস্থা নিরপরাধ ফাতেমার কারাভোগের বিষয়ে কোনোরকম উচ্চবাচ্চ কিংবা প্রতিবাদ করেনি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নির্লিপ্ততা দেখে মনে হচ্ছে মানবাধিকার ব্যাপারটা শুধুমাত্র সমাজের উঁচুতলার মানুষদের জন্য। সমাজের নিচুতলার লোকজন মানবাধিকার পাওয়ার অধিকার রাখে না।