সমঝোতার প্রথম ধাপ দৃশ্যমান | বাংলারদর্পন 

নিউজ ডেস্ক :

বেগম খালেদা জিয়া যে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, সেটি মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু নির্বাচনের সময় তিনি কোথায় থাকবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। নির্বাচনের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারেও থাকতে পারেন, মুক্ত হয়ে দেশে থাকতে পারেন অথবা বিদেশে অবস্থান করতে পারেন। এই মুহূর্তে বেগম জিয়ার অবস্থান হলো তিনি বিদেশে যেতে চান। যতদিন প্রয়োজন বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে চান। সরকারের সঙ্গে এই নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে পর্দার আড়ালে। সমঝোতা যে এগুচ্ছে তা বোঝা যায় বেগম জিয়ার অসুস্থতা এবং অসুস্থতার পর সরকারের পদক্ষেপে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সমঝোতার প্রথম ধাপ দৃশ্যমান। জনমনে এই বিশ্বাস স্থাপন সম্ভব হয়েছে যে বেগম জিয়া ’অসুস্থ’। এখন অসুস্থ বেগম জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে। প্রথম ধাপে সিভিল সার্জনের পরামর্শে ৪ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ড বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তাকে ওষুধ দেন। চিত্রনাট্যে এটা অনুমিতই ছিল যে, বেগম জিয়া এসব পরামর্শ গ্রহণ করবেন না। তিনি তাঁর নিজস্ব চিকিৎসক চাইবেন। বেগম জিয়া সেটি চেয়েছেন। জেল কর্তৃপক্ষ এখন তাঁর পছন্দের চিকিৎসকের তালিকা চেয়েছেন। আজ কালের মধ্যে এই তালিকাও জেল কর্তৃপক্ষের হাতে আসবে। ধারণা করা হচ্ছে, বেগম জিয়ার পছন্দের চিকিৎসকদের সরকার স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি দেবে। আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, ‘বিষয়টি স্পর্শকাতর। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমাদের নেত্রীকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখনো তাকে বাইরের চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’ এরকম অনুমতি পাবার পর বেগম জিয়ার চিকিৎসকরা কি বলবেন, সেটি অনুমান করতে কারও কষ্ট হবার কথা নয়। তাঁরা বলবেন, ‘বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য ভালো নয়। যে কোনো সময়েই তাঁর স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হতে পারে। তাঁর সব চিকিৎসাই লন্ডনে এবং সৌদি আরবে হয়েছে। কাজেই অবিলম্বে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন।‘ অত:পর এই সার্টিফিকেট নিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা যাবেন হাইকোর্টে। বলবেন, ‘বেগম জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে অবিলম্বে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন।‘ আদালতে যুক্তি তর্কের এক পর্যায়ে বেগম জিয়ার প্যারোলও হবে। বেগম জিয়া বিদেশে চলে যাবেন।

সিটি নির্বাচনে যেমন বিএনপি আন্দোলনের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণ করছে। ঠিক তেমনি খালেদাবিহীন বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নেবে। আর লন্ডন থেকে এই নির্বাচনের মনোনয়ন দেবেন তারেক জিয়া। মনোনয়ন বাণিজ্য হবে। তারেক জিয়ার থলেতে ঢুকবে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ। এরপর বিএনপিকে দিয়ে আবারও আন্দোলন-আন্দোলন খেলবেন তারেক। আর লন্ডনে যাবার পর বেগম জিয়ার শেষ অধিকারটুকুও কেড়ে নেবেন তাঁর সন্তান তারেক জিয়া। বেগম জিয়া তখন যাবেন অবসরে, আর বিএনপির সর্বময় কর্তৃত্ব নেবেন তারেক জিয়া।

জিয়া অরফানেজ মামলায় দণ্ডিত হবার পরিপ্রেক্ষিতে এভাবেই বেগম জিয়ার পরিণতির রূপকল্প আঁকা হয়েছে। বেগম জিয়ার রাজনীতির ইতি ঘটবে হয়তো এভাবেই। তবে, পরিকল্পনা বা রূপকল্প সবসময় একই ভাবে বাস্তবায়িত হয়না। বেগম জিয়া কি পারবেন এই পরিকল্পনা পাল্টে দিতে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *