রাষ্ট্রপতি হতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া, তারেককে বানাতেন প্রধানমন্ত্রী!

 

ডেস্ক রিপোর্ট :

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ বলেছেন, বেগম জিয়া সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের রাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আয়োজন করেছিলেন। ২২ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তাঁর রাষ্ট্রপতি হবার পরিকল্পনা ছিল, তখন তারেক হতেন প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্কে তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপকালে সাবেক সেনাপ্রধান এই মন্তব্য করেন।

 

সম্প্রতি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলী মঈন ইউ আহমেদের সমালোচনা করেন। আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের উৎসাহেই এই মামলা।’

 

নিউইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটির কয়েকজন জেনারেল মঈনের কাছে এর সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক সেনাপ্রধান এ তথ্যকে আজগুবি এবং অসত্য বলে মন্তব্য করেন।

 

জেনারেল মঈন বলেন, ওই মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান করেছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মাশহুদ চৌধুরীকে। তিনি অত্যন্ত সৎ ও নীতিবান মানুষ।

 

মঈন ইউ আহমেদ স্থানীয় বাঙ্গালিদের বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দিয়েছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশন যা করেছে, তা স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ ভাবেই করেছে। এ ব্যাপারে আমার বা সেনাবাহিনীর কোনো ভূমিকা ছিল না।

 

স্থানীয় বাঙালিরা সাবেক সেনাপ্রধানের কাছে জানতে চান যে, তিনি তিন বাহিনীর প্রধান হতে চেয়েছিলেন কিনা? জবাবে তিনি এটাকেও কল্পনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করেন। জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ বলেন, `বরং বেগম জিয়াই আমাকে ২২ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করতে বলেছিলেন।’

 

মঈন ইউ মনে করেন, `২২ জানুয়ারি ২০০৭ সালের নির্বাচন হলে দেশ হতো দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য। দেশে কায়েম হতো রাজতন্ত্র।’তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, `এক সন্ধ্যায় ডেকে ম্যাডাম আমাকে ২২ জানুয়ারি নির্বাচন করতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাইলেন।’

 

তিনি আমাকে বললেন, ‘এটাই আমার শেষ নির্বাচন।’ আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি কী অবসরে যাবেন’, উত্তরে তিনি হেসে বললেন, ‘ছেলেরা আমাকে রাষ্ট্রপতি বানাতে চাইছে।’ আমি তখন জানতে চাইলাম, ‘তাহলে প্রধানমন্ত্রী কে হবে?’ উত্তরে তিনি তারেকের নাম উচ্চারণ করেন।

 

বাঙালি কমিউনিটির কাছে এই প্রথম খোলামেলা আলোচনায় সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারেও তিনি আমার সাহায্যে চেয়েছিলেন।’

 

জেনারেল মঈন বলেন, বেগম জিয়ার সমস্যা হলো, তিনি সেনাবাহিনীকে তাঁর নিজস্ব সংগঠন বা কেনা গোলাম মনে করেন। সেনাবাহিনীর প্রধানের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর কাছ থেকে সেনাবাহিনী উল্লেখ করার মতো কিছুই পায়নি। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর ভাইয়ের (প্রয়াত সাঈন ইস্কান্দার) বন্ধু-বান্ধবরা লাভবান হয়েছে।’

 

সাবেক এই সেনাপ্রধান মনে করেন, ‘বেগম জিয়া যদি তাঁর ছেলের দেখানো পথে না হেঁটে, বিএনপির বিচক্ষণ নেতাদের পরামর্শে চলতেন তাহলে তাঁর বা বিএনপির এই অবস্থা হতো না।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *