ডেস্ক রিপোর্ট :
জামায়াত অভিযোগ করেছে যে, যোগ্যতা কিংবা জনপ্রিয়তার বিচারে নয় বরং তারেক জিয়াকে টাকা দিয়ে মনোনয়ন পেয়েছে তাবিথ আউয়াল।
দলটি বিএনপিকে বলেছে, জামায়াত নীতিগতভাবে মনোনয়ন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে, তাই তাবিথ আউয়ালকে ২০ দলের একক প্রার্থী হিসেবে তারা মেনে নেবে না। রোববার দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে জামাত নেতৃবৃন্দের বৈঠকে এই অভিযোগ করা হয়।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। আগামী ১৬ জানুয়ারি রাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে একক প্রার্থীতার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জামায়াতকে ঢাকা উত্তর মেয়র পদে প্রার্থী না দেওয়ার জন্য রাজি করাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ দুপুরে গুলশানের একটি বাড়িতে জামায়াতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জামায়াত বলে, ২০ দল যদি এককভাবে প্রার্থী দিতে আন্তরিক হতো, তাহলে ২০ দলীয় জোটগতভাবে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেওয়া উচিত ছিল। সেটি হলো না কেন?
জামায়াত বলে, বিএনপি জোটে বড় দল এজন্য তারা তাদের সিদ্ধান্তই জোটের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে।
উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরকম কোনো চিন্তা থেকে তারা এটি করেননি। তিনি বলেন, যেহেতু দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেহেতু জামাতের নিবন্ধন নেই, তাই এই নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া হবে অর্থহীন।
উত্তরে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, জামায়াতের কর্মীরা মার্কা দেখে ভোট দেয় না, তারা ভোট দেয় প্রার্থী দেখে। আমাদের যে প্রার্থী যে প্রতীক নিয়েই দাঁড়াক, তাঁকে কর্মীরা ভোট দেবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জামায়াত স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করলে সরকারই লাভবান হবে, জামায়াত বা বিএনপির কোনো লাভ হবে না।
উত্তরে জামায়াত প্রতিনিধিরা বলেন, একক নির্বাচন করলে সবচেয়ে লাভবান হবে জামায়াত। আমাদের শক্তি কতটুকু তা সরকার এবং বিএনপি বুঝবে। এর ফলে সরকারও জামাতকে হিসেব করবে, বিএনপিও জামায়াতকে গুরুত্ব দেবে।
জামাত নেতারা বলেছেন, যদি জোটের বৈঠকে আলাপ-আলোচনা করে তাবিথকে প্রার্থী করা হতো, তাহলে আমরা মেনে নিতাম। কিন্তু আমরা জানি, লন্ডন থেকে তাবিথকে প্রার্থী করা হয়েছে, জোট তো দূরের কথা বিএনপিতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এরকম চাপিয়ে দেওয়া প্রার্থীর ব্যাপারেই জামাতের আপত্তি।
মির্জা ফখরুল আশ্বাস দেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়ের আগেই জোটের ‘বৈঠকে’ প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা হবে। এতে জামায়াত রাজি হয়। তবে জামায়াত জানিয়েছে, তাদের প্রার্থী সেলিম মনোনয়নপত্র কিনবেন এবং জমাও দেবেন। শেষপর্যন্ত যদি সমঝোতা হয়, তাহলেই জামায়াত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবে।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপির মহাসচিব জামায়াতকে বলেছেন, ২০ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করলে জামায়াতকে ৬টি কাউন্সিলর পদ ছেড়ে দেওয়া হবে। জামাত অবশ্য ৩৬টি কাউন্সিলর পদেই তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বলে জানিয়েছে।