নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রোহিঙ্গা মুসলিমদের জান-মালের নিরাপত্তায় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে—ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর
আরাকানে গণহত্যার প্রতিবাদ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার বাদিতে পীর সাহেব চরমোনাই আহূত লংমার্চ উপলক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর। আগামী ১৮ ডিসেম্বর (রবিবার) সকাল ৯ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সমাবেশ শেষ করে লক্ষাধিক মানবতাবাদী জনতার অংশগ্রহণে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চ যাত্রা করবে ইনশাআল্লাহ। এতে নেতৃত্ব দেবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংগ্রামী আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে শরণার্থী হিসেবে মানবেতর জীবন-যাপনরত সকল রোহিঙ্গা মুসলিমকে তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন, নাগরিক মর্যাদা, শিক্ষা-কর্ম ও ভূমিসত্ত্বের অধিকার, আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা ও ধর্ষণের বিচার, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আরাকান রাজ্যে মানবিক বিপর্যয় রোধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর হযরত পীর সাহেব আগামী ১৮ ডিসেম্বর রবিবার, সকাল ৯টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত শেষে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চে নেতৃত্ব দেবেন। জমায়েতে ওলামা-মাশায়েখ, বুদ্ধিজীবী ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন।
এ দিকে লংমার্চ সফলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সারা দেশ থেকে লংমার্চে অংশগ্রহণকারী সকল মেহমানদের জন্য মেহমানদারি, আপ্যায়ন, অজু-ইস্তেনজা এবং সামিয়ানা টাঙিয়ে রাতে থাকার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষ্যে আজ (বৃহস্পতিবার), সকল ৯ ঘটিকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানরের দেওয়ানহাটস্থ কার্যালয়ে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতির বক্তব্যে জননেতা জান্নাতুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাসবাদ ইসলাম সমর্থন করে না। সন্ত্রাসী ধরার নামে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের শত শত ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, ত্রিশ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে, একুশ হাজারের মতো নারী ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে একটি জাতিকে সম্পূর্ণভাবে উচ্চেদ করাল লক্ষ্যে মিয়ানমার বৌদ্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এ অভিযান পরিচালনা করছে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, কর্ম, ভূমিস্বত্ব, ভোটাধিকার ও নাগরিক মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া, বাজেয়াপ্ত ওয়াকফ সম্পত্তি ফেরত, মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া মুসলমানদের কবরস্থান, গুঁড়িয়ে দেয়া মসজিদ-মাদরাসাসহ সকল ধর্মীয় স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুননির্মাণ, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শরণার্থী হিসেবে মানবেতর জীবন যাপনরত সকল রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের দাবি জানান এবং উপর্যুক্ত দাবিসমূহ আদায়ে বিশ্বমুসলিমকে আগামী ১৮ ডিসেম্বর মিয়ানমার অভিমুখে সর্বাত্মকভাবে লংমার্চ সফল করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জননেতা আলহাজ মুহাম্মদ আবুল কাশেম মাতব্বর, আলহাজ মুহাম্মদ আল-ইকবাল, মাওলানা সুলতানুল ইসলাম ভূঁইয়া, ডা. মুহাম্মদ রেজাউল করীম, এইচএম মুসলেহ উদ্দীন, মু. সগির আহমদ চৌধুরী, মাওলানা তরীকুল ইসলাম সরকার, মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম শাহীন, ওলামা-মাশায়েখ নেতা মাওলানা শেখ মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, শ্রমিক নেতা আলহাজ মুহাম্মদ ওয়ায়েজ হোসাইন ভুঁইয়া, ডা. মুহাম্মদ ফরিদ খান, অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ রফিকুল আলম, আলহাজ মুহাম্মদ আলী আকবর, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিক্ষক নেতা মাওলানা কারী দিদারুল মওলা, ছাত্রনেতা মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
কর্মসূচি
১। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকাল ৯ ঘটিকায় আগ্রাবাদ বাদামতলী চত্বর থেকে বিজয় র্যালি।
২। মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চ সফলে আগামী ১৭ ডিসেম্বর (শনিবার) বেলা ৪ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরের সকল থানায় একযোগে মানববন্ধন।